প্রতীকী ছবি।
কয়েক মাস আগেও একটি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় (দরপত্র চাওয়া থেকে শুরু করে তা পেশ এবং শেষমেশ কাজের দায়িত্ব কার হাতে, সেই সিদ্ধান্ত) এ রাজ্যে গড়ে সময় লেগে যেত ছ’সাত মাস। সেখানে এখন দু’মাসের মধ্যেই শতাধিক কাজের টেন্ডার-প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে! প্রশাসনের একাংশের দাবি, গ্রামীণ পরিকাঠামো খাতে খরচ করা বা টেন্ডারের এক্তিয়ার জেলা পরিষদগুলির হাত থেকে নিয়ে পঞ্চায়েত দফতরের কাছে কেন্দ্রীভূত করার কারণেই এই গতি। ‘উন্নয়নকে’ দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলছেন তাঁরা। যদিও প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই বাড়তি গতির আমদানি তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত যেখানে পঞ্চায়েত ভোট দ্রুত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রামীণ পরিকাঠামো-সহ প্রয়োজনীয় প্রকল্পের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারি স্তরে।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের দাবি, গত এপ্রিলের শেষে ‘গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ (আরআইডিএফ-২৭) প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কাজের প্রায় ১২০টি টেন্ডার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। দু’মাসের মাথায় সেই সব প্রক্রিয়ার শেষে কাজের বরাত দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “আগে এই ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করতে ছ’সাত মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেত।’’ তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা বা সড়ক প্রকল্পের কাজ নিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য। যে অভিযোগে প্রকল্পগুলির টাকা বন্ধ হয়েছে, তা-ও কার্যত অস্বস্তিজনক। বিশেষত পার্থ-কাণ্ড সামনে আসার পরে সেই অস্বস্তি আরও বেড়েছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির কাজ শুরু করে দিতে পারলে অন্তত গ্রামবাংলা তথা পঞ্চায়েতের ভোটারদের কাছে ইতিবাচক বার্তা তুলে ধরা যাবে বলে তাঁদের ধারণা। তাঁদের দাবি, অর্থ-সঙ্কট যে রাজ্যের উন্নয়ন-ভাবনাকে ঠেকাতে পারেনি, দেওয়া যাবে সেই বার্তাও।
যদিও পঞ্চায়েত ভোটের প্রেক্ষিতেই যে এই দ্রুততা, সেই তত্ত্ব মানতে নারাজ দফতরের কর্তারা। তাঁদের ব্যাখ্যা, আগে এমন গ্রামীণ পরিকাঠামো প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বিস্তারিত প্রকল্প-রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করত জেলা পরিষদ। পঞ্চায়েত দফতরকে পাঠানোর পরে তা যেত নাবার্ডের কাছে। নাবার্ডের অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলির টেন্ডার ডাকা এবং ওয়ার্ক-অর্ডার দেওয়ার ভার ছিল জেলা পরিষদের উপরেই। সেই ২৩টি জেলার দায়িত্ব সাত জন সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরাই টেন্ডার প্রক্রিয়া দেখভাল করছেন। দীর্ঘসূত্রিতা এড়াতেই এই পদ্ধতিগত বদল বলে পঞ্চায়েত দফতরের দাবি। এক কর্তার কথায়, ‘‘দফতরের পরীক্ষা-পদ্ধতি মেনে ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রকল্পের কাজের গুণমান যাচাই করবেন। রাজ্যস্তরে গুণমান নজরদারির পরিকাঠামোও তৈরি হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy