Advertisement
E-Paper

বিজেপি-সিপিএমের দিকেই তির মমতার

সীমানা থেকে অস্ত্র এনে, কোটি কোটি টাকা ছড়িয়ে, নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এ রাজ্যে তৃণমূলকে হয়রান করতে চাইছে বলে ফের সরব হয়েছেন মমতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৫:৩০
মমতার নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

মমতার নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে ঘিরে গোলমাল থামার এখনও কোনও লক্ষণ নেই। কোথাও শাসক দলের দুই গোষ্ঠী, কোথাও শাসকের সঙ্গে বিরোধীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজ্যের নানা জেলার নানা এলাকা। এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৬। পঞ্চায়েতে স্থানীয় এবং ব্যক্তি স্বার্থ থেকেই গোলমাল হয় বলে মন্তব্য করে সোমবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সব দলের কাছেই শান্তিরক্ষার আবেদন করেছিলেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে মঙ্গলবার তিনি অবশ্য অশান্তির জন্য বিজেপি এবং সিপিএমকেই দায়ী করেছেন। তাঁর মন্তব্য, সিপিএমের ‘হার্মাদ’রাই এখন বিজেপির ‘জল্লাদ’!

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য এ দিনই কলকাতায় পাল্টা বলেছেন, ‘‘গোটা দেশে বাংলাই একমাত্র রাজ্য যেখানে শাসক দলের কর্মীরা নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের উপরেই হামলা করে! বিরোধীদের কোনও অধিকার নেই, শাসক দলেরও নিরাপত্তা নেই।’’ আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীর ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রায় ১০০ লোক মারা যাওয়ার পরে এখন মুখ্যমন্ত্রীর মনে হল, হিংসা হচ্ছে এবং সেটা বন্ধ হওয়া দরকার? কেন? এখন ওঁর দলের লোকের উপরে আক্রমণ হচ্ছে, ওঁর বিধায়কেরা আক্রান্ত হচ্ছেন, পরিস্থিতি ওঁর হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাই?’’

উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ও চোপড়ায় প্রবল গোলমাল হয়েছে এ দিন। অশান্তির খবর এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা, বাঁকুড়ার ইঁদপুরের মতো নানা জায়গা থেকেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় নবান্নের নির্দেশে পুরুলিয়ায় বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলাশাসকদেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজন মনে করলে তাঁরাও অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বিরোধীরা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছে, বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা হয়েও পিছিয়ে গেলে ঘোড়া কেনাবেচা বাড়বে না তো? আর পরবর্তী দিনেও যে অশান্তি হবে না, তার নিশ্চয়তা কী?

গাঁধীমূর্তির পাদদেশে এ দিন টিএমসিপি-র সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘‘কোনও দিনই খুনোখুনির রাজনীতি সমর্থন করি না। আজও সমর্থন করি না। গত ৩৪ বছর ধরে সিপিএমের যে হার্মাদরা বাংলায় অত্যাচার করেছে, কুৎসা করেছে, লুঠ করেছে, তারাই আজ বিজেপির বড় ওস্তাদ!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘বাম আর রাম ডামডাম বাজাচ্ছে! এমন নির্লজ্জ দল কখনও দেখিনি।’’

সীমানা থেকে অস্ত্র এনে, কোটি কোটি টাকা ছড়িয়ে, নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এ রাজ্যে তৃণমূলকে হয়রান করতে চাইছে বলে ফের সরব হয়েছেন মমতা। সীমান্ত প্রহরায় বিএসএফ সঠিক ভূমিকা নিতে ব্যর্থ, এই অভিযোগও ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ইয়েচুরির আবার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের হাত ধরে হিংসার রাজনীতি বাংলায় গভীর শিকড় তৈরি করেছে। পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজকর্ম ছাড়িয়ে দখলদারি আর হিংসাই এখন বড় কথা।’’ প্রায় একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘লুঠে খাওয়াকে অবাধ ছাড়পত্র দেওয়ার ফলেই ভোট থেকে বোর্ড গঠন, সবেতেই শুধু বোমা আর গুলি!’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দায়িত্ব ছিল নদিয়া, ঝাড়গ্রামে। দু’টো জেলাতেই তৃণমূলকে শুইয়ে দিয়েছি। পুরুলিয়ায় অভিষেক গিয়ে দখল করার চেষ্টা করছেন। বোর্ড গড়ার জন্য পুলিশ সেখানে গুলি চালিয়েছে। একতরফা গুলি কিন্তু বেশি দিন চলবে না! আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়ছি। একতরফা গুলি খাওয়ার জন্য আসিনি!’’

Mamata Banerjee Political Violence BJP CPIM TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy