কয়েক দিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনোজিৎ মণ্ডল নাম না-করে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন বলে ফেসবুকে লিখেছিলেন। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চটোপাধ্যায় খুবই ক্ষুব্ধ। উপাচার্য সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এ-হেন মন্তব্য তিনি যে পছন্দ করছেন না, মন্ত্রী পরিচিত মহলে তা জানিয়ে দিয়েছেন।
মনোজিৎবাবু তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র নেতা। ২৮ মে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একাধিক ফেসবুক পোস্ট করেন তিনি। যাদবপুরের একাধিক শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তাঁরা যে খুবই যোগ্য, তা লেখেন সেই সব পোস্টে। লেখেন, এই সব যোগ্য ব্যক্তির স্বীকৃতি নেই। শুধু এক জন ‘এক্স-অক্সফোর্ড’-কেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা অনুপস্থিত থেকে দেশের সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছেন। মনোজিৎবাবু পোস্টে লিখেছেন, চার বছরে ৪০০ দিনও দফতরে উপস্থিত থকেননি উপাচার্য। শুধু ওই দফতরকে নিজের বিশ্বভ্রমণের কাজে লাগিয়েছেন।
পোস্টে সুরঞ্জনবাবুর নাম উল্লেখ না-করলেও তিনি যে তাঁর সম্পর্কেই এ-সব লিখেছেন, তা অস্বীকার করেননি মনোজিৎবাবু। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বাস্তব যা, তা-ই লিখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর নিন। অন্যেরাও একই কথা বলবেন।’’
মনোজিৎবাবু যা-ই বলুন, শিক্ষামন্ত্রী ব্যাপারটা পছন্দ করছেন না বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় শুক্রবার বলেন, ‘‘উপাচার্যের চেয়ারের একটা সম্মান আছে। তাঁর বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ভাবে লেখালেখি করা বোধ হয় ঠিক নয়।’’
২০১৫ সালে ‘হোক কলরব’ আন্দোলনের জেরে অভিজিৎ চক্রবর্তী উপাচার্য-পদ থেকে সরে গেলে সুরঞ্জনবাবু যাদবপুরের উপাচার্য হন। তার আগে তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এই জুনেই তাঁর বয়স ৬৫ বছর হয়ে যাবে। তবে জানুয়ারিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দীক্ষান্ত ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, উপাচার্যদের অবসরের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৭০ করা হবে। স্থির হয়, ৬৫ বছরে উপাচার্যদের কাজের মেয়াদ শেষ হলেও তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি বিচার করে কাজের সময়সীমা বাড়ানো হবে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, সুরঞ্জনবাবুকে সরকার উপাচার্য-পদে রাখতেই আগ্রহী।