E-Paper

ভোট না সংগঠন, নিয়মের গেরোয় বিজেপি

বিধায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক, দুই জায়গাতেই বর্তমানে আছেন বেশ কয়েক জন। যেমন, দীপক বর্মণ ও অগ্নিমিত্রা পাল।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

যাঁরা আগামী বিধানসভা ভোটে লড়তে পারেন, তাঁরা দলের নতুন রাজ্য কমিটিতে থাকবেন না— সংগঠন এবং নির্বাচনকে আলাদা রাখার লক্ষ্যে এমন নীতি নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সূত্রের খবর, নেতাদের একাংশ এই নীতি সমর্থন না-করায় কমিটি ঘোষণা নিয়ে জট তৈরি হয়েছে। ওই অংশের নেতাদের তরফে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকেও নির্বাচনী সাফল্য পেয়েছেন, এমন অনেকেই আছেন।

বিধায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক, দুই জায়গাতেই বর্তমানে আছেন বেশ কয়েক জন। যেমন, দীপক বর্মণ ও অগ্নিমিত্রা পাল। বিজেপি সূত্রের দাবি, নীতি মেনে তাঁদের নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে না-থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, আগামী ভোটেও তাঁরা প্রার্থী হতে পারেন। প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে নীতিগত বাধা নেই। কিন্তু তিনি প্রার্থী হলে জটিলতা বাধবে। একই কথা প্রযোজ্য বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়েও। এই অবস্থায় দলীয় সূত্রের দাবি, নেতৃত্বের অনেকেই সাংগঠনিক পদ এবং প্রার্থী হওয়া— দু’টিতেই আগ্রহী। আর এখানেই জটিলতা।

বিজেপি সূত্রের খবর, কয়েক দফা বৈঠকেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। বরং, দু’রকম মত উঠে এসেছে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার দাবি, “কাকে কোথায়, কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শেই এই নীতি।” এ দিকে অন্য এক নেতার প্রশ্ন, “এত দিন যাঁরা দায়িত্ব নিয়ে দল পরিচালনা করেছেন, তাঁদের একটা নীতি এনে দায়িত্ব থেকে সরালে হবে? যে সব জনপ্রতিনিধি পরিষদীয় রাজনীতি ও সাংগঠনিক কাজ, দু’টিতেই দক্ষ, তাঁদের বিকল্প কারা?”

এই জটিলতার মাঝে নতুন কমিটির সম্ভাব্য পদাধিকারীদের নাম নিয়ে রাজ্য বিজেপিতে জল্পনা চলছে। নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো থেকে যেতে পারেন। বাকি চারটি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, প্রবাল রাহা, নিশীথ প্রামাণিক, দেবশ্রী চৌধুরী, এমনকি ‘সাময়িক বরখাস্ত’ রীতেশ তিওয়ারির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে জল্পনা রয়েছে। সূত্রের দাবি, নিশীথের নাম প্রস্তাব করতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আলোচনা চলছে সাধারণ সম্পাদক পদে দুই মহিলা মুখ রাখা এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুলের নাম নিয়েও।

বিজেপি সূত্রের ইঙ্গিত, সাধারণ সম্পাদক না-হলে দলের প্রধান মুখপাত্র হিসেবেও রাহুলের নাম চর্চায় আছে। রাহুলের দিকে বর্তমান রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের ‘সমর্থন’-ও রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আর এক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়েও চর্চা রয়েছে। তবে বাংলার রাজনীতিতে তাঁর ‘সম্ভাব্য’-সক্রিয়তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। বরং, তাঁকে উত্তর-পূর্ব ভারতে কোনও রাজ্যের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা নিয়ে চর্চা রয়েছে। তবে রাজ্যে দলে ফের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সঞ্জয় সিংহ, রাজকমল পাঠকদের। গুরুত্ব বাড়তে পারে প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

রাজ্য কমিটি নিয়ে জল্পনার মাঝে দলের যুব, মহিলা-সহ বিভিন্ন মোর্চার ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি হিসেবে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, শশী অগ্নিহোত্রী, কেয়া ঘোষ এবং যুব মোর্চার সভাপতি হিসেবে তরুণজ্যোতি তিওয়ারি, এবিভিপি-র প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকার, বাঁকুড়ার নেতা সৌগত পাত্র, আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচী প্রমুখের নাম দলের অন্দরে চর্চায় রয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy