পকেটে কনফার্মড রিজার্ভেশন টিকিট। কিন্তু বার্থে শোয়ার উপায় নেই। গাদাগাদি করে পাশে বসে আরও চার জন। মাস দেড়েক আগে টিকিট সংরক্ষণ করেও সারা রাত ঠায় বসে থাকতে হয়েছে কর্মসূত্রে বেলঘরিয়ার বাসিন্দা অমিতাভ দত্তকে।
শুক্রবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে পৌঁছেছে পদাতিক এক্সপ্রেস। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিড়ের চাপে গত বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালদহ থেকেই ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়। এনজেপিতে পৌঁছে ক্ষুব্ধ অমিতাভবাবু অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সংরক্ষিত কামরাতেও পিলপিল করে লোক উঠেছিল। সিটে এমনকি প্যাসেজের মধ্যেও লোকে বসেছে। টিকিট পরীক্ষক থেকে নিরাপত্তা রক্ষী দেখেও না দেখার ভান করে চলে গিয়েছে। ভিড় দেখে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীরাও ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনি।’’
তবে একুশে জুলাইয়ের সভায় যোগ দিতে ট্রেনে চেপে কলকাতায় যাওয়া কর্মী-সমর্থকদের সংরক্ষিত কামরায় উঠতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। গত মঙ্গলবার থেকে কলকাতাগামী ট্রেনে যাতে সংরক্ষিত কামরার যাত্রীদের কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য এনজেপি স্টেশনে তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবকরা নজরদারিতে ছিলেন। যদিও শিয়ালদহ থেকে ছাড়া দার্জিলিং মেল থেকে পদাতিক এক্সপ্রেস সবেতেই সংরক্ষিত কামরায় থাকা সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ। সংরক্ষিত কামরার টিকিট না থাকা সত্ত্বেও কেউ উঠে যান বার্থে, কেউ বা ঠেলাঠেলি করে বসে পড়েন সিটে। প্যাসেজেও কর্মী সমর্থকরা দাঁড়িয়ে পড়েন। যার জেরে কামরার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত, বাথরুমে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
তৃণমূলের সাধারণ কর্মী-সমর্থক কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বাসিন্দা সঞ্জীব বিশ্বাস, বাদল আর্য, বলরামপুরের বাসিন্দা হরিপদ সরকারেররা পদাতিক এক্সপ্রেস থেকে এনজেপিতে নেমেছেন। হরিপদবাবুর কথায়, ‘‘ফেরার তাড়া ছিল। সবারই একটু অসুবিধে হয়েছে।’’
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব জানিয়েছেন, ট্রেনে থাকা নিরাপত্তাকর্মী, টিকিট পরীক্ষকদের থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, রেল আগে থেকে সক্রিয় হলে এই পরিস্থিতি হত না। পরে সক্রিয় হওয়া নেহাতই ‘লোক দেখানো’ বলে অভিযোগ। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেব বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। আমরা রাত পর্যন্ত শিয়ালদহে দাঁড়িয়ে সব তদারকি করেছি। খোঁজ নিচ্ছি।’’
এ দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি থাকায় জল-কাদা-ভিড়ে এনজেপি স্টেশনে এ দিন নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের সকলকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy