Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Salboni Iron Factory

‘বাংলার মুখ’ হয়েছেন দাদা, জিন্দলদের অব্যবহৃত জমিতে দ্রুত ইস্পাত কারখানা চায় শালবনি

শালবনিতে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল জিন্দল গোষ্ঠীকে, বড় ইস্পাত কারখানা গড়ার জন্যই। ২০০৮ সালে প্রস্তাবিত সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

জিন্দল প্রকল্পের ফাঁকা জমিতে চরছে ছাগল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

জিন্দল প্রকল্পের ফাঁকা জমিতে চরছে ছাগল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

বরুণ দে
শালবনি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৯
Share: Save:

বিদেশ থেকেই তিনি ইস্পাত কারখানা গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার পরে মাস দুয়েক কেটে গিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তিনি বাংলার নতুন ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’। আর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যেখানে ইস্পাত কারখানা গড়বেন বলে ঘোষণা হয়েছিল, সেই শালবনিতে শিল্পের জন্য নেওয়া সেই জমি এখন গরু-ছাগলের বিচরণভূমি! স্পেনের মাদ্রিদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে করা ঘোষণা কবে বাস্তব হবে, সেই প্রশ্নই এখন শালবনির মুখে মুখে।

এখানকার জমিদাতা সংগঠনের নেতা পরিষ্কার মাহাতো বলছেন, ‘‘সৌরভ বাংলার ‘মুখ’ হয়েছেন বলে শুনেছি। দাদা যখন হবে বলেছেন, তখন নিশ্চয়ই কারখানাটা হবে। আমরা চাই, দ্রুত হোক। মানুষ কাজ পাক।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যে জমি আমরা শিল্পের জন্য দিয়েছি, সেখানে শিল্পই করতে হবে।’’

দেড় দশক আগে, বাম আমলে শালবনিতে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল জিন্দল গোষ্ঠীকে, বড় ইস্পাত কারখানা গড়ার জন্যই। ২০০৮ সালের নভেম্বরে প্রস্তাবিত সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ফেরার পথে ল্যান্ডমাইন হামলার মুখে পড়ে তাঁর কনভয়। ক্রমে শুরু হয় মাওবাদী-পর্ব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ইস্পাত কারখানার পরিকল্পনা বাতিল করে বদলে সিমেন্ট কারখানা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় জিন্দলরা। ২০১৮ সালে সেই কারখানার উদ্বোধন হয়েছে মমতার হাতে। তবে জমির অনেকটাই পড়ে রয়েছে।

সূত্রের খবর, জিন্দল গোষ্ঠী ‘অব্যবহৃত’ জমি ফেরত দিলে, তারই একটি অংশে নতুন করে ইস্পাত কারখানা হওয়ার সম্ভাবনা। প্রশাসনিক সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, কয়েক মাস আগেই জিন্দল প্রকল্পের জমির মাপজোক করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে। দেখা যাচ্ছে, জিন্দলদের দেওয়া জমির প্রায় ৮০ শতাংশই ‘অব্যবহৃত’ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ২০ শতাংশের মতো জমি ‘ব্যবহৃত’ হয়েছে। জিন্দল গোষ্ঠীকে যে জমি দেওয়া হয়েছিল, তার বেশিরভাগই সরকারি জমি। কিছু জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছিল। জমি দিয়েছিলেন প্রায় ৪৯০ জন। এর মধ্যে ৮৪৯.০২ একর জমি ‘ব্যবহৃত’। জামবেদিয়া-সহ ন’টি মৌজায় বিস্তৃত এই জমি। বাকি ৩২৫২.৯৫ একর জমি ‘অব্যবহৃত’ অবস্থায় পড়ে। ভালুকচটি-সহ ১৪টি মৌজায় বিস্তৃত এই জমি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি মানছেন, ‘‘জমি জরিপ করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’’ সঙ্গে ‘অব্যবহৃত’ জমির মানচিত্রও পাঠানো হয়েছে। তার পরে অবশ্য কাজ আর এগোয়নি।

সূত্রের খবর, শালবনির প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হতে পারে। রাজ্যের ছাড়পত্র মিলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sourav Ganguly TMC Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE