পিংলায় বাজি-বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুতির নতুন চাঁদরা গ্রামের জহিরুদ্দিন শেখ (১৮) শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন। শুক্রবার সকালে ওই সদ্য কিশোরের মৃত্যুতে পিংলা-কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩। মৃতদের দশ জনই নতুন চাঁদরার বাসিন্দা।
৬’মে রাতে পিংলার ব্রাহ্মণবাড় গ্রামের ওই বিস্ফোরণের পর দেখা গিয়েছিল বাজি তৈরির ওই আটপৌরে কারখানায় মোটা অঙ্কের মজুরির টানে কাজ করত বেশ কয়েক জন শিশু-কিশোর। ওই ঘটনায় এক দিকে যেমন রাজ্যে বেআইনি বাজি তৈরির ছবিটা প্রকাশ্যে আসে, তেমনি সামনে এসে পড়ে শিশু শ্রমিকদের এই ধরনের বিপজ্জনক পেশায় নিয়োগের বিষয়টি।
পরিস্থিতি আড়াল করতে সরকার তড়িঘড়ি নতুন চাঁদরায় নিহত ৯ জনকে ২ লক্ষ টাকা করে এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে দেয়। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের হাতে সে টাকা তুলেও দিয়ে আসেন।
মন্ত্রী অবশ্য এই ধরনের কারখানায় শিশু-শ্রমিকের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। ওই গ্রামের উন্নয়নে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ঘোষণা করে আসেন তিনি।
ঘটনার দিন রাতে গ্রামে গিয়ে পুলিশ জানায়, শুধু ওই বাড়িটি নয়, গ্রামে অন্যান্য কয়েকটি বাড়িতেও প্রচুর বারুদ মজুত করা রয়েছে। সেই বারুদ উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্তও হয় পুলিশ।গ্রামবাসীদের অবশ্য পাল্টা দাবি, সে দিন রাতে পুলিশ গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে তল্লাশির নামে তাণ্ডব চালিয়েছিল। তারই ‘বদলা’ নিতে পরের দিন গ্রামে ঢুকে পুলিশ গ্রামবাসীদের মারধরও করে বলে অভিযোগ। সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, ‘‘গ্রামে বারুদ যদি মজুতই ছিল তবে তা পেল না কেন পুলিশ?’’
এই পরিস্থিতিতে, শুক্রবার আহত জাহিরুদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে জহিরুদ্দিনের দেহ আনতে এ দিন বিকেলেই গ্রামের অনেকে কলকাতা রওয়ানা হয়েছেন। আজ, শনিবার অরঙ্গাবাদে নতুন চাঁদরার ঘটনাকে সামনে রেখে শিশু শ্রম নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন । সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের শিশু অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোকেন্দু সেনগুপ্তের। মুর্শিদাবাদ জেলা শিশু কল্যাণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিশুশ্রম কী করে আটকানো যায় সে ব্যাপারে গ্রামের মানুষকে সচেতন করতেই সভা ডাকা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy