Advertisement
E-Paper

ই-মেলে ফাঁস রাজ্যে এলপিজি দুর্নীতির ছক

তদন্তকারীদের দাবি, এলপিজি দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া বিজেপি নেতা রণজিৎ মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার আগেই দলীয় নেতাদের ই-মেল করে এলাকাভিত্তিক এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেছিলেন।

শিবাজী দে সরকার ও রোশনী মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কাগজে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার আগেই এলপিজি দুর্নীতির ছক তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) ডিস্ট্রিবিউটরশিপ দেওয়ার জন্য পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে সরকারি বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পনেরো দিন আগেই ধৃত রণজিৎ মজুমদার বৈঠক করে সব ঠিক করে নিয়েছিলেন। এর জন্য অভিযুক্ত বিজেপি নেতা বিভিন্ন জেলার বিজেপি সভাপতিকে ই-মেল করেন। তাতে গ্রামে গ্রামে ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিতে ইচ্ছুক কর্মী, সমর্থকদের নাম পাঠাতে বলেন। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন,‘‘ই-মেলের সূত্র ধরেই তালিকা তৈরি হয়। এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে চার থেকে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। পুরো টাকাটাই নগদে লেনদেন করা হয়েছিল।’’

তদন্তকারীদের দাবি, এলপিজি দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া বিজেপি নেতা রণজিৎ মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার আগেই দলীয় নেতাদের ই-মেল করে এলাকাভিত্তিক এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেছিলেন। ধৃত নেতাকে জেরা করে ওই ই-মেল উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ই-মেল খতিয়ে দেখার পর পুলিশের দাবি, প্রায় ২৩৪ জনের কাছ থেকে গড়ে তিন থেকে সাত লক্ষ টাকা নেওয়া হয় বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।

লালবাজার সূত্রের খবর, বিধাননগরের প্রাক্তন বিজেপি নেতা অশোক সরকার অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ করেন গ্রামে গ্রামে এলপিজি বা রান্নার গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকার দুর্নীতি করেছেন কয়েকজন বিজেপি নেতা। ওই তদন্তে নেমে লালবাজার কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের ৯ জন বাছাই করা অফিসারকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে রণজিৎ মজুমদারকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত ওই নেতা কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই তদন্তে রণজিৎ মজুমদার ছাড়াও মুর্শিদাবাদ-সহ বেশ কয়েকটি জেলার নেতৃত্বকে ওই ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। টাকা দিয়ে প্রতারিত হওয়া বিজেপি কর্মী সমর্থককেও জেরা করেছে পুলিশ।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘দল এতে জড়িত নয়। কোনও ব্যক্তি জড়িত হয়ে থাকলে তাঁর দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। দল দায়িত্ব নেবে না।’’ তবে একই সঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কেউ যদি কারও নাম সুপারিশ করেন, তাতে আপত্তির কী আছে? তবে অবৈধ ভাবে টাকার লেনদেন হয়ে থাকলে যিনি দিয়েছেন এবং যিনি নিয়েছেন, দু’পক্ষেরই শাস্তি হওয়া উচিত।’’ কিন্তু এলপিজির ডিস্ট্রিবিউটরশিপের বিজ্ঞাপন খবরের কাগজে বেরনোর আগেই সে বিষয়ের খুঁটিনাটি দলীয় বৈঠকে আলোচনা করে ফেলাটা কি অন্যায় নয়? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘দলীয় বৈঠক হয়নি। কোনও কোনও ব্যক্তি বৈঠক করে থাকতে পারেন। তবে যে দল যখন সরকারে থাকে, তারাই তখন এ রকম করে। আমরা চেষ্টা করি, না করতে।’’

LPG Corruption Email
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy