এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন ঋষভ সিংহ ও দিব্যাংশু ভগত।—ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালের এক প্রান্তে আশা, অন্য প্রান্তে উদ্বেগ। হুগলির পোলবায় স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার জেরে ওই হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন খুদে পড়ুয়া দিব্যাংশু ভগতের শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে বুধবার। কিন্তু সঙ্কটজনক থেকে অতি-সঙ্কটের গহ্বরে চলে গিয়েছে তার সঙ্গী ঋষভ সিংহ।
শুক্রবার স্কুলের পথে চালক, অভিভাবক-সহ ১৬ জন পড়ুয়াকে নিয়ে গাড়িটি নয়ানজুলিতে পড়ে গিয়েছিল। কাদাজলে সংজ্ঞা হারিয়ে ডুবে ছিল ঋষভ ও দিব্যাংশু। নোংরা জল ঢুকে দুই পড়ুয়ার ফুসফুস কার্যত অকেজো করে দেয়। দিব্যাংশুকে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চলে। ঋষভের জন্য কৃত্রিম ফুসফুস ইকমো বা ‘এক্সট্রা কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজিনেশন’-এর সাহায্য নিতে হয়। ছ’দিন ধরে সেই যন্ত্রের সাহায্যেই ঋষভের চিকিৎসা চলছে কার্ডিয়ো থোরাসিক বিভাগে। এসএসকেএম সূত্রের খবর, কাদাজল ঋষভের ফুসফুস শুধু অকেজোই করেনি, তা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রের শরীরে বিপজ্জনক জীবাণু ও ছত্রাক বাসা বেঁধেছে। এ দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণও সেই জীবাণু ও ছত্রাক। চিকিৎসকদের মতে, ওই খুদে পড়ুয়ার শরীরে যে-জীবাণু বাসা বেঁধেছে, তা পরাক্রমী। তাকে দ্রুত কাবু করতে না-পারলে একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ইতিমধ্যেই নানান শারীরিক জটিলতা দেখা দিয়েছে। শরীরে হিমোগ্লোবিন, প্লেটলেটের মাত্রাও কম রয়েছে।
তবে আগের তুলনায় ভাল আছে দিব্যাংশু। চোখ খুলছে, হাত-পা নাড়াতে পারছে। এসএসকেএম সূত্রের খবর, দিব্যাংশুর শরীরেও সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। তবে ওষুধে তা কমে গিয়েছে। এ দিন ছেলের কাছে যেতে পেরেছিলেন মা রিমা ভগত। মায়ের ডাকে সাড়া দিয়েছে দিব্যাংশু। রিমাদেবী বলেন, ‘‘আমি নাম ধরে ডাকায় মাথা নাড়িয়ে চোখ খুলল। ছেলে যাতে চিন্তা না-করে, সেই জন্য বললাম, আমরা সকলেই হাসপাতালে আছি। জানি, এটা এমন কিছু নয়। তবু এত দিন পরে এটুকুই অনেকখানি বলে মনে হচ্ছে।’’
এসএসকেএমের উপাধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘ঋষভের শরীরে কয়েক ধরনের জীবাণু ও ছত্রাক ঢুকেছে। এটা উদ্বেগের। দিব্যাংশুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।’’
স্কুলগাড়ির বাচ্চাদের উদ্ধার করতে নয়ানজুলির জলে ঝাঁপিয়েছিলেন আবগারি দফতরের এক অফিসার এবং তিন কনস্টেবল। ওই চার জন এবং তাঁদের গাড়িচালককে পুরস্কার দেবে আবগারি দফতর। সরকারও যাতে তাঁদের সাহসিকতার পুরস্কার দেয়, তার জন্য সুপারিশ করা হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তিন কনস্টেবল তাপস মণ্ডল, অমিত মণ্ডল ও গৌরহরি মাহারাকে নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিলেন আবগারি দফতরের ওসি মৃত্যুঞ্জয় দে। গাড়িচালক বাপ্পা দাসের হাতে মোবাইল ও মানিব্যাগ রেখে জামাকাপড় পরেই জলে ঝাঁপিয়ে বাচ্চাদের উদ্ধার করেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy