সন্দেশখালিতে আক্রান্ত পুলিশ কনস্টেবল সন্দীপ মণ্ডলের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়ে গিয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কনস্টেবলের মস্তিষ্ক সংক্রান্ত আরও কোনও সমস্যা নেই। তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। সেটা বার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে রয়েছেন সন্দীপ। আগামী তিন-চার দিন তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন চিকিৎসকেরা।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত ১১টার পরে শীতলিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে পড়েন জনা কয়েক দুষ্কৃতী। পুলিশকর্মীদের মারধর করেন তাঁরা। কনস্টেবল সন্দীপকে লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সন্দীপকে প্রথমে সন্দেশখালির খুলনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তড়িঘড়ি তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপের মাথায় গুরুতর চোট লাগে। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে। এর পরেই চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। এই মারধরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করে পুলিশ।
সন্দেশখালির একটি ফ্লাড সেন্টারে রয়েছে শীতলিয়ার পুলিশ ফাঁড়িটি। সেই ফাঁড়িতে আচমকা হামলা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, সন্দেশখালিতে যখন অশান্তি চলছিল, তখনও শীতলিয়া এলাকায় তার আঁচ পড়েনি। প্রশ্ন উঠছে, কেন গভীর রাতে পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালানো হল? পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আটক তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ ওঠে শাহাজাহান ‘অনুগামী’-দের দিকে। তিন জন ইডি আধিকারিককে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকে খোঁজ মিলছিল না শাহজাহানের। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে আবার উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি। স্থানীয় মহিলাদের একাংশ শাহজাহান-সহ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে পথে নামেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। ফেব্রুয়ারির শেষে গ্রেফতার হন শহাজাহান। গ্রেফতারির আগেই তাঁকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এর পর সোমবার রাতে আবার হামলার ঘটনা হয় সন্দেশখালিতে। আক্রান্ত হন পুলিশ কনস্টেবল সন্দীপ।