Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশি পরিবারকে হারানো টাকা-পাসপোর্ট খুঁজে দিল পুলিশ

গত পরশু কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের নুরুদ্দিন আহমেদ মুস্তাফা ও তাঁর স্ত্রী মাফুজা নুর। বছর বারোর মেয়ে নুরে জন্নত নুসরতের ব্রেন টিউমার। তারই চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে বৃহস্পতিবার ভেলোরের ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁদের। রাত সাড়ে ৮টায় যসবন্তপুর এক্সপ্রেস ধরার জন্য হাওড়া স্টেশনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৭:৪৩
গোলাবাড়ি থানার আইসি তথাগত পাণ্ডের তৎপরতায় হারানো টাকাপয়সা-পাসপোর্ট পেয়ে আপ্লুত বাংলাদেশি পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

গোলাবাড়ি থানার আইসি তথাগত পাণ্ডের তৎপরতায় হারানো টাকাপয়সা-পাসপোর্ট পেয়ে আপ্লুত বাংলাদেশি পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ট্যাক্সিতে টাকাপয়সা-পাসপোর্ট হারিয়ে মহা বিপাকে পড়েছিল বাংলাদেশি এক পরিবার। মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে তা উদ্ধার করে দিল পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের টাকায় টিকিটের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে হোটেলের যাবতীয় খরচ মেটাল তারা। পুলিশের এমন আচরণে অভিভূত বাংলাদেশি ওই পরিবার।

গত পরশু কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের নুরুদ্দিন আহমেদ মুস্তাফা ও তাঁর স্ত্রী মাফুজা নুর। বছর বারোর মেয়ে নুরে জন্নত নুসরতের ব্রেন টিউমার। তারই চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে বৃহস্পতিবার ভেলোরের ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁদের। রাত সাড়ে ৮টায় যসবন্তপুর এক্সপ্রেস ধরার জন্য হাওড়া স্টেশনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, স্টেশনে পৌঁছে খেয়াল হয়, খোয়া গিয়েছে টাকাপয়সা-পাসপোর্ট। যে ব্যাগে সেগুলি রেখেছিলেন তা ফেলে এসেছেন ট্যাক্সিতেই। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁদের। স্টেশনেই হাপুসনয়নে কাঁদতে থাকেন নুরুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী মাফুজা। তাঁদের ওই অবস্থায় দেখে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন পুলিশকর্মীরা।

আরও পড়ুন

আইফেল টাওয়ার থেকে তাজমহল, কী নেই রাম রহিমের ডেরায়!

গোটা ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাওড়ার গোলাবাড়ি থানায় নিয়ে যান তাঁরা। এর পর কাজে নেমে পড়ে পুলিশ। গোলাবাড়ি থানার আইসি থানার আইসি তথাগত পাণ্ডের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বড় দল ওই ড্রাইভারের খোঁজ শুরু করে। প্রথমেই স্টেশন এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এর পর সেই ফুটেজ দেখে ট্যাক্সির নম্বর চিহ্নিত করা হয়। এর পর মোটর ভেহিকলসে গিয়ে ওই ট্যাক্সি নম্বরের মালিকের নাম-ঠিকানা মেলে। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ পৌঁছে যায় ড্রাইভার সমীর মিত্রের ডেরায়। উদ্ধার হয় টাকাপয়সা, পাসপোর্ট রাখা ব্যাগটি। সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

এখানেই থেমে থাকেনি তারা। নুরুদ্দিনের পরিবারের জন্য আগামী পরশুর জসবন্ত এক্সপ্রেস-এর টিকিটের ব্যবস্থাও করে দিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে এ ক’দিন হোটেলে থাকার খরচাপাতিও বহন করবে পুলিশ।

আরও পড়ুন

১৫ শতাংশ ডিএ বাড়ালেন মমতা, ২০১৯-এর মধ্যে বকেয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতি

বাইরে ঘোরাঘুরি করছে কিছু লোক, মা বোনকে জানিয়েছিলেন গৌরী

উদ্ধার হওয়া টাকা ও পাসপোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।

হারানো ব্যাগ পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আপ্লুত নুরুদ্দিন ও মাফুজা। সেই সঙ্গে পুলিশের আচরণেও উচ্ছ্বসিত নুরুদ্দিন। তিনি বলেন, “দেশে ফিরে জানাব, ভারতে গিয়ে কী ভাবে সাহায্য পেয়েছি।” বাংলাদেশে গিয়ে কোনও ভারতীয় বিপদে পড়লে যেন এ ভাবেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় তা-ও জানিয়েছেন তিনি।

এই উদ্ধারকাণ্ডে পিছনে রয়েছেন যে পুলিশ আধিকারিক সেই তথাগত পাণ্ডে অবশ্য এক রুটিনমাফিক কর্তব্য বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়: “মেয়েটির ব্রেন টিউমার হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্যই ভেলোরে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করাটাজরুরি ছিল। ঘটনার কথা শুনে আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। ওই পরিবার টাকা, মালপত্র হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিল। আমাদের কর্তব্য সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া। তা-ই করেছিমাত্র।”

Police Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy