Advertisement
E-Paper

লকেট-সহ ৬ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রবিবারের ওই জনসভার মঞ্চে কালোসোনাবাবু বলেন, ‘‘পুলিশকে ভাল ভাবে বললে কথা শুনবে না। ওদেরকে মারলে ওরা কথা শুনবে। তাই পুলিশকে মারুন! প্রশাসন কিছু করতে পারবে না।’’ ওই মঞ্চ থেকেই লকেট নাম না করে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘জেলার এক দাদা আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০১
বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ ৬ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল মহম্মদবাজার থানার পুলিশ।—ফাইল চিত্র।

বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ ৬ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল মহম্মদবাজার থানার পুলিশ।—ফাইল চিত্র।

অনুমতি না নিয়ে সভা এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশের অভিযোগে বিজেপি-র বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল পুলিশ। হলও তাই। রবিবার মহম্মদবাজার থানার শ্রীকান্তপুরে দলীয় সভা থেকে একযোগে পুলিশ-প্রশাসন-শাসক দলকে হুমকি দেওয়া ও প্ররোচনামূলক বক্তব্যের জন্য বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়, জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল-সহ ছয় নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল মহম্মদবাজার থানার পুলিশ।

রবিবারের ওই জনসভার মঞ্চে কালোসোনাবাবু বলেন, ‘‘পুলিশকে ভাল ভাবে বললে কথা শুনবে না। ওদেরকে মারলে ওরা কথা শুনবে। তাই পুলিশকে মারুন! প্রশাসন কিছু করতে পারবে না।’’ ওই মঞ্চ থেকেই লকেট নাম না করে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘জেলার এক দাদা আছে। যে মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না। তাকে নাকি সবাইকে মানতে হবে! সব ভেঙে দিন, গুঁড়িয়ে দিন। প্রশাসন কিছু করতে পারবে না। বাঁচার তাগিদে সবাইকে রাস্তায় নেমে অস্ত্র ধরতে হবে।’’ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী অনামিকা ঘোষও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দাদাগিরি চলবে না। কোনও তৃণমূল কর্মী বিজেপি কর্মীদের চোখ রাঙালে সেই চোখ আমি উপড়ে নেব! কেউ বিজেপি কর্মীদের গায়ে হাত দিলে হাত ভেঙে দেব।’’

মামলা হওয়ার পরে প্রতিক্রিয়া জানতে চেষ্টা করেও লকেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে দলের জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি সভার শেষ ভাগে পৌঁছেছিলাম। তার পর কাউকে কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে শুনিনি।’’ অন্য দিকে, কালোসোনাবাবুর দাবি, তিনি যা বলেছেন, আইনের মধ্যে থেকেই বলেছেন। তবে তিনি কিছু বললেও যাঁরা কিছুই বলেননি, তাঁদের বিরুদ্ধেও জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আসলে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে চাপে রাখতে পারলে মহম্মদবাজার ব্লকের ‘টাই’ হওয়া রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত হাতে পেতে সুবিধা হবে বলে ধারণা শাসকদলের। পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজটাই করেছে। যদিও এ সব করে লাভ কিছু হবে না।’’

বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা পুলিশ। পুলিশকর্তাদের একাংশের কথায়, ‘‘বোমা মারো বলার পরে যদি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, তা হলে কেন বিজেপি নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে হবে না? উস্কানিমূলক বক্তব্যের অভিঘাত ধরেই ধারা প্রয়োগ হয়েছে।’’ রবিবার জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহও জানিয়েছিলেন, বিজেপি-র সভায় বক্তব্যের ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। খতিয়ে দেখে ধারা প্রয়োগ হবে। পুলিশের আরও দাবি, অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শ্রীকান্তপুরে রবিবার বিজেপি জনসভার আয়োজন করে।

অভিযুক্তদের তালিকায় অবশ্য নাম নেই বিজেপি নেত্রী অনামিকার। কিন্তু দলের স্থানীয় নেতা ফণীভূষণ রায়, সন্তোষ ভাণ্ডারি এবং কিছুদিন আগে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করায় অভিযুক্ত সিউড়ির নির্মল মণ্ডলের নাম রয়েছে। বিজেপি-র আপত্তি সেখানেই। তাদের অভিযোগ, যে বা যাঁরা মঞ্চে কিছুই বলেননি, তাঁদের নামও মামলায় জুড়ে দেওয়ার পিছনে কোনও অভিসন্ধি রয়েছে। যাতে তাঁদের কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারেন। কিছুটা হলেও ইঙ্গিত মিলেছে সোমবার জেলাশাসকের দফতরের সামনে একটি কর্মসূচি পালনের সময়। নানা দাবি নিয়ে এ দিন দুপুর ১টা থেকে বিজেপি মহিলা মোর্চার ধর্না ও অবস্থান বিক্ষোভ ছিল। রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি হিসাবে মহিলা মোর্চার নেত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিজেপি নেতাদের। সেখানে নির্মল মণ্ডল ছাড়া পুলিশের অভিযোগে নাম না থাকা নেতারা ছিলেন না। গ্রেফতারি এড়াতেই কি ওই নেতারা গরহাজির থাকলেন, জল্পনা চলছে।

Police BJP Complaint Locket Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy