Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেএমবির খোঁজে পুলিশি-তদন্ত শুরু

ইটাহার, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর এলাকায় গিয়ে পুলিশের লোকজন এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৭
Share: Save:

উত্তর দিনাজপুর জেলায় জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) ঘাঁটি তৈরির ছক কষেছিল। সংগঠনের চাঁই মহম্মদ ইজাজকে গ্রেফতারের পরে এমনটাই জানতে পেরেছে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। অথচ জেলা পুলিশ বা গোয়েন্দারা এই ব্যাপারে অন্ধকারে। ইজাজ ধরা পড়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। তার পরেই টনক নড়েছে তাঁদের। শুক্রবার থেকে জেলার গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন এবং জেলা পুলিশের তরফে জেলা জুড়েই ওই জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে। এসটিএফের একাধিক দল জেলার বিভিন্ন অংশে সাদা পোশাকে ঘুরছে। কখনও মোটরবাইকে প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছচ্ছেন তাঁরা।

ইটাহার, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর এলাকায় গিয়ে পুলিশের লোকজন এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন। ইটাহারের সুরুন-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মহানন্দার বারিওল ঘাটে গিয়ে তাঁরা লক্ষ্য করেন, ওই জায়গা থেকে নদী পেরিয়ে বিহারের আবাদপুরে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। পুলিশের কাছে তথ্য এসেছে, নজরদারি না থাকায় ওই নদী পেরিয়ে বিহার থেকে ইটাহারে যোগাযোগ শুরু করে জেএমবির লোকজন। ইজাজ গ্রেফতার হওয়ার পরে জেরা করে ওই তথ্য জানা গিয়েছে। এসটিএফের কাছ থেকে সব জেনে ডিআইবি ও ইটাহার থানার পুলিশকে খোঁজখবর করার নির্দেশ দিয়েছেন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার কর্তারা। ভবিষ্যতে এ রাজ্য থেকে বিহারে ওই পথে কারা যাতায়াত করছেন, তা জানতে ওই নদীর উপরের সাঁকোটিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হতে পারে। রাজ্য গোয়ান্দা বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেএমবির সদস্যরা ইটাহারে আস্তানা গড়ার ছক করেছিল বলে সন্দেহ।

অন্য দিকে, জেলায় থাকা সিমির লোকজনের সঙ্গে জেএমবির যোগসাজশ রয়েছে বলে পুলিশের একাংশের দাবি। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জেএমবির চাঁই মহম্মদ ইজাজ উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, চাকুলিয়া গোয়ালপোখোর এলাকায় ঘুরে গিয়েছে বলে এসটিএফ জানতে পেরেছে। ওই এলাকায় সিমি সক্রিয় ছিল। ২০০১ সালে সিমি নিষিদ্ধ হলে তাদের তৎপরতা কমে। সিমির প্রাক্তনীরা জেএমবির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে কিনা, তা দেখা হচ্ছে। জেলা পুলিশ মন্তব্য করতে চাননি। গোয়েন্দাদের মতে, ইজাজ বিহারের কিসানগঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে উত্তর দিনাজপুরের লাগোয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাও করে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, চলতি বছরের গোড়ায় ইজাজ সংগঠন তৈরির জন্য গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া থানা এলাকার কয়েকটি জায়গাতেও আসে। রেল বা সড়ক ধরে সে বিহার থেকে ওই দুই এলাকায় ঢুকেছিল বলে সন্দেহ। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার (উত্তর দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) সুমিত কুমার ও ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার সচিন মক্কর এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশের শীর্ষকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, উত্তর দিনাজপুর জেলায় কাদের সঙ্গে ইজাজের যোগাযোগ ছিল, তা জানতে এসটিএফ তদন্ত করছে। জেলায় সংগঠন তৈরির পরেই নাশকতা ঘটানো হত বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। কিসানগঞ্জ, বারসই, পূর্ণিয়া ও কাটিহারের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল ইজাজের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

JMB Terrorism Police Investigation Raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE