পোলবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। —ফাইল চিত্র।
আট দিন লড়াইয়ে পরে শনিবার ভোরে হার মানল ঋষভ সিংহ। এ দিন তার মৃত্যুর পরে পোলবায় স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার ঘটনায় ওই গাড়ির মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করার জন্য আদালতে আবেদন জানাল পুলিশ।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোলবায় নয়ানজুলিতে উল্টে গিয়েছিল ঋষভদের স্কুলগাড়ি। ঘটনার পরে এক প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। এ দিন হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা যোগ করার জন্য পোলবা থানার তরফে চুঁচুড়া আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।’’
ঋষভের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল একাংশ স্কুলগাড়ির আইন ভাঙার পরিণতি কতটা ভয়ানক। কিন্তু তার পরেও যে হুঁশ ফেরেনি প্রমাণ মিলেছে এ দিন সকালে। পান্ডুয়ার জয়পুর রোডে মোটরচালিত ভ্যানে খাঁচা লাগানো স্কুলগাড়ি ছুটতে দেখা গিয়েছে। আবার হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডে মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় চালককে স্কুলগাড়ি চালাতে দেখা গিয়েছে। তাঁর পাশেই বসে ছিল তিন খুদে।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর সঙ্গে আট দিনের লড়াই শেষ ঋষভের
পোলবার ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। রাজ্য ট্র্যাফিক দফতরের নির্দেশে স্কুলগাড়ি চালক, অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করেছে সমস্ত জেলা পুলিশ ও কমিশনারেট। এডিজি (ট্র্যাফিক) বিবেক সহায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত জেলায় ওই শিবির করা হয়েছে। মোটর ভেহিকলস ইন্সপেক্টরদের সঙ্গে নিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। যে সব স্কুলগাড়ি ব্যক্তিগত মালিকানার, সেগুলি বাণিজ্যিক করার জন্য বলা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, যে গাড়িতে বাচ্চা যাতায়াত করছে সেটা কতটা নিয়ম মেনে চলছে তা দেখার বিষয়টিই বোঝানো হচ্ছে অভিভাবকদের। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘একটা শিবির করেছি। তবে রুটিন মাফিক আরও এমন শিবির হবে। চেকিংও করা হচ্ছে।’’ বাচ্চা নেমে যাওয়ার পরে গাড়িগুলিকে স্কুল সংলগ্ন মাঠে দাঁড় করানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেছে পূর্ব বর্ধমান পুলিশ। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবহণ ও পুলিশ আধিকারিকরা এক সঙ্গে ওই মাঠেই সব গাড়ির স্বাস্থ্য, কাগজ পরীক্ষা করবেন। বর্ধমান শহরে দু’টি স্কুলে করাও হয়েছে।’’ কলকাতার সমস্ত ট্র্যাফিক গার্ড ইতিমধ্যেই সচেতনতা শিবির করেছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলগাড়ি চেকিংও করা হচ্ছে।’’
এ দিন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিদেশে স্কুলবাসকে অন্য কোনও গাড়ি ওভারটেক পর্যন্ত করে না। স্কুলগাড়ির ক্ষেত্রে পুলিশের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।’’ অন্যদিকে এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার কিছু চালককে কোনও মতেই শিক্ষা দিতে পারছে না। কেন্দ্রের উচিত বেপরোয়া চালকদের জন্য আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy