Advertisement
E-Paper

বহু সাঙ্কেতিক চিরকুট, অর্থ নিয়ে ধোঁয়াশা

বিভিন্ন ফাইলে, আলমারিতে গোঁজা কিছু চিরকুট। তাতে লেখা বিভিন্ন সংখ্যা ও তথ্য! বালি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএমের অরুণাভ লাহিড়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে টাকা না মিললেও এমনই বেশ কিছু চিরকুট উদ্ধার করেছে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। কিন্তু সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা ওই চিরকুটগুলি আসলে কী, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪৫
অরুণাভ লাহিড়ী

অরুণাভ লাহিড়ী

বিভিন্ন ফাইলে, আলমারিতে গোঁজা কিছু চিরকুট। তাতে লেখা বিভিন্ন সংখ্যা ও তথ্য!

বালি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএমের অরুণাভ লাহিড়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে টাকা না মিললেও এমনই বেশ কিছু চিরকুট উদ্ধার করেছে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। কিন্তু সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা ওই চিরকুটগুলি আসলে কী, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।

তদন্তকারীদের অনুমান, বালির কোথায় কত নির্মাণ বা আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেগুলিই ওই চিরকুটে লিখে রাখা হয়ে থাকতে পারে। তবে ওই চিরকুটগুলি প্রাক্তন চেয়ারম্যান নিজেই লিখেছিলেন না সেগুলি অন্য কেউ লিখে তাঁকে পাঠাতেন, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রয়োজনে ওই লেখা হস্তলিপি বিশারদের কাছে পাঠানো হবে বলেও দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রের খবর। দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, বালি পুরসভার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রণব অধিকারীকে জেরায় কয়েক বারই উঠে আসে অরুণাভবাবুর নাম। সে কারণে শনিবার তাঁকেও জেরা করেন তদন্তকারীরা। সে দিনই তাঁকে জানানো হয়, মঙ্গলবারের মধ্যে সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথি জমা দিতে হবে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখায়। সেই মতো অরুণাভবাবু নথি জমা দিতে আসেন। ওই দিনই আদালতের অনুমতি নিয়ে অরুণাভবাবু এবং তাঁর শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, অরুণাভবাবুর বাড়ি থেকে জীবন বিমা ও দীর্ঘমেয়াদী আমানতের নথির বহু খালি খাম মিলেছে। কিন্তু তিনি দুর্নীতি দমন শাখায় সম্পত্তির যে নথি জমা দিয়েছেন, সেই সংখ্যার থেকে খালি খামের সংখ্যা বেশি। মঙ্গলবারের তল্লাশিতে বেশ কিছু খালি গয়নার বাক্স মিললেও সেগুলি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন অরুণাভবাবু। আবার, অরুণাভবাবুর মতো হাই-প্রোফাইল এক নেতার বাড়িতে কোনও দলীয় বই বা কাগজ মেলেনি। তা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, বাড়িতে থাকা সব কিছুই তিনি সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু দলীয় বই বা কাগজ কেন সরাবেন অরুণাভবাবু? তাঁর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘তদন্তকারীরা কী পেয়েছেন বা পাননি, তা নিয়ে কিছু বলব না।’’

তদন্তকারীদের আরও দাবি, অরুণাভবাবু তাঁদের জানিয়েছেন, তিনি নিজে চালাতে না পারলেও তাঁর একটি মোটরবাইক আছে। সেটি তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কেনা হলেও টাকা দেওয়া হয়েছিল দলীয় তহবিল থেকে। প্রাক্তন চেয়ারম্যানের দেওয়া এই তথ্য কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, দিন কয়েক আগে স্থানীয় নির্মাণকারী সংস্থার থেকে জমি বিক্রি বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন বলেও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন অরুণাভবাবু। তিনি দাবি করেছেন, পারিবারিক একটি সম্পত্তির কিছু অংশ তাঁর নামে ছিল। সেটি তিনি বিক্রি করেছেন, তার জন্যই ওই টাকা অগ্রিম নিয়েছেন। এই সংক্রান্ত নথিও দুর্নীতি দমন শাখায় জমা দিয়েছেন। প্রাক্তন চেয়ারম্যানের দেওয়া এই তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা।

অরুণাভবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমার দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখলেই সব প্রমাণ পাওয়া যাবে। বিষয়টি বিচারাধীন বলে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রের খবর, সাব-অ্যাসিস্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রণব ও তাঁর ছেলে তন্ময়কে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। প্রণবের থেকে আরও কিছু নথি, ডায়েরি মিলেছে। তাতে কয়েক জন ব্যক্তির নাম লেখা থাকলেও অধিকাংশকেই ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করে লেখা রয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, তদন্তে অনেক পুরকর্তার পাশাপাশি স্থানীয় কয়েক জন ঠিকাদার ও প্রোমোটারের নামও মিলেছে।

police former chairman ghusuri money CID CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy