Advertisement
E-Paper

খুন না আত্মহত্যা, জেরা চলছে হাওড়ার দম্পতির

হোটেলের বন্ধ ঘরে গাড়ি চালকের অপমৃত্যুর ঘটনায় শনিবারও হাওড়ার চিকিৎসক দম্পতি এবং তাঁদের এক আত্মীয়কে দফায় দফায় জেরা করল পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের দিঘা ছাড়তে বারণ করেছে পুলিশ। আপাতত ওই তিনজন দিঘারই এক হোটেলে পুলিশি নজরদারিতে রয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০১:৪৩

হোটেলের বন্ধ ঘরে গাড়ি চালকের অপমৃত্যুর ঘটনায় শনিবারও হাওড়ার চিকিৎসক দম্পতি এবং তাঁদের এক আত্মীয়কে দফায় দফায় জেরা করল পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের দিঘা ছাড়তে বারণ করেছে পুলিশ। আপাতত ওই তিনজন দিঘারই এক হোটেলে পুলিশি নজরদারিতে রয়েছেন। তাঁদের বয়ানের সঙ্গে হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার নিউ দিঘার এক হোটেলে অভিজিৎ দত্ত নামে ওই গাড়ি চালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তিনি লিলুয়ার বাসিন্দা চিকিৎসক দম্পতি সুজয়, পায়েল দত্ত এবং পায়েলের ভাই টিঙ্কু মণ্ডলের গাড়ির চালক হিসাবে বৃহস্পতিবার রাতে দিঘা গিয়েছিলেন। ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়ে অবশ্য ধন্দ কাটেনি। চিকিৎসক দম্পতি-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিজিতের দাদা সুরজিৎ। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, এটা আত্মহত্যাও হতে পারে। কারণ, অভিজিতের ঘর ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। দরজা ভেঙে তাঁর দেহ উদ্ধার করতে হয়েছিল।

শুক্রবারই ময়নাতদন্তের পর অভিজিতের দেহ তাঁর পরিজনের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং অভিযুক্তদের কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সম্ভাব্য সব দিক দেখা হচ্ছে।’’

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হোটেলে দু’টি মুখোমুখি ঘর বুক করেছিলেন চিকিৎসক দম্পতি। তার মাঝের বারান্দায় সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেই ফুটেজ থেকে ঘটনার রাতে কে, কখন, কোন ঘরে ঢুকেছেন-বেরিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসক দম্পতির বয়ানের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে ওই ফুটেজের মিল পাওয়া যাচ্ছে। অভিযুক্তেরা তদন্তে সহযোগিতাও করছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সুজয়দের বুক করা ঘর থেকে ১১টি বিয়ারের বোতল পাওয়া গিয়েছে। সকলেই যে একসঙ্গে ওই রাতে মদ্যপান করেছিলেন, তা পুলিশকে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক দম্পতি। মদ শেষ হওয়ায় মাঝরাতে টিঙ্কু এবং অভিজিৎ ফের মদ আনতে গিয়েছিলেন বলে তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন। পুলিশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে তার রেকর্ড মিলেছে। তবে গভীর রাতে অভিজিতেরা কোথা থেকে ফের মদ জোগাড় করলেন, মাত্র সাত দিন আগে কাজে যোগ দেওয়া চালকের সঙ্গে বাকিরা কেন মদ্যপান করছিলেন, তাঁদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতা কতটা— সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে সুজয়েরা জানিয়েছিলেন, মদ্যপানের পরে পায়েল একটি ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। অন্য ঘরে বাকিরা শুয়েছিলেন। ভোরে অভিজিৎ উঠে পায়েলের ঘরে গিয়ে তাঁকে হেনস্থা করেন বলে দাবি অভিযুক্তদের। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিজিৎ পায়েলের ঘরে ঢুকছেন, ফুটেজে সেই রেকর্ড রয়েছে। কিছুক্ষণ পরেই ওই ঘর থেকে চিকিৎসকের স্ত্রী বেরিয়ে আসেন। উত্তেজিত হয়ে পাশের ঘরে থাকা স্বামী এবং ভাইকে ডাকেন। এমনকী, ঘরের মধ্যে অভিজিৎকে রেখে বাইরে থেকে আটকে দেওয়ার সিসিফুটেজও বয়ানের সঙ্গে মিলেছে। কিন্তু যে সময়টুকু পায়েলের ঘরে অভিজিৎ ছিলেন, তখন কী হয়েছিল, ঘরে ক্যামেরা না থাকায় তার কোনও ফুটেজ নেই।

পায়েল পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনিও নেশার ঘোরে ছিলেন। ফলে তখন কী হয়েছে প্রথমে বুঝতে পারেননি। নেশার কাটতে তিনি বোঝেন অভিজিতের কোনও খারাপ মতলব রয়েছে। তখনই তিনি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। গোটা ঘটনা পুলিশকে জানাবেন বলে অভিজিৎকে নাকি হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন চিকিৎসক দম্পতি। সেই ভয়েই অভিজিৎ আত্মঘাতী হয়েছেন কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Murder Suicide Digha Car Driver Mystery Investigation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy