Advertisement
E-Paper

অভিষেকের অসুস্থতা অধীরের মতে ‘ভণ্ডামি, প্রশ্নে সৌজন্য-বোধ

অভিষেকের এই বিদেশে অস্ত্রোপচারকে ‘রাজনৈতিক ভণ্ডামি’ বলে মন্তব্য করেছেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২৭
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছে আমেরিকায়। অস্ত্রোপচারের পরের ছবি দিয়ে তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন শাসক দলের নেতারা। কিন্তু তৃণমূল সাংসদের বিদেশে চিকিৎসা করাতে যাওয়া নিয়েও রাজনৈতিক কটাক্ষ চলছে। অভিষেকের এই বিদেশে অস্ত্রোপচারকে ‘রাজনৈতিক ভণ্ডামি’ বলে মন্তব্য করেছেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। যা কত দূর সঙ্গত এবং সৌজন্যের পরিচায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের এমন আচরণের প্রতিবাদে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল।

বহরমপুরে রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় গিয়ে আরএসএস বা বিজেপির সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হতে পারে! কারণ, চোখ দেখাতে এর আগে উনি গেলেন সিঙ্গাপুর, এখন গেলেন আমেরিকা। দু’জায়গাতেই উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা। অথচ সিঙ্গাপুরে চোখ সারলো না। আমেরিকায় গিয়ে চোখ কি সারলো?’’ এই প্রসঙ্গে তিনি টেনে আনেন গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে চোট পাওয়ার প্রসঙ্গও। অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পা ভেঙেছিল। নির্বাচন মিটতেই দিদি তরতরিয়ে হাঁটতে লাগলেন! এটাও সেই রকমের একটি রাজনৈতিক ভণ্ডামি!” তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এই বিজেপি সরকার, এই ইডি-সিবিআই তাঁর (অভিষেক) পরিবারের লোককে উড়ানে উঠতে দিচ্ছে না। আর যে মূল অভিযুক্ত, তাঁকে আমেরিকা যেতে দিল কেন? প্রশ্ন তো উঠছে!”

রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত কুরুচিকর প্রশ্ন। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় শুধু চোখই নয়, চোখের আধারেও গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন অভিষেক। জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল, তা করতেই আমেরিকায় গিয়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত স্তরে এই রকম কুৎসা করলে অধীরবাবু যেন মনে রাখেন কাচের ঘরে বসে ঢিল ছোড়ার পরিণাম!’’ আদালত অভিষেককে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়ও বলেন, ‘‘অধীরবাবু সব কিছুতে রাজনীতি খুঁজতে গিয়ে মানবিকতা হারিয়েছেন! তাঁর এই ধরনের মন্তব্যকে ধিক্কার জানাই। সবাই জানেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য আমেরিকা গিয়েছেন।”

প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা শুভঙ্কর সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘অভিষেকের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, কোনও রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রী কোথায় চিকিৎসা করাবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। অতীতে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বিনিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠকের জন্য বিদেশে গেলে ছুটি কাটাতে যাওয়ার কথা উঠতো এবং সেই সমালোচনা সিপিএমকে তাড়া করতো, এ রকম নানা উদাহরণ আছে। রাজনৈতিক শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে প্রশ্ন উঠলে উত্তর দেওয়ার দায়িত্ব তাঁদের দলেরই।’’ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী কেন অনেক দিন ধরেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান, তার ব্যাখ্যা দল দিয়ে থাকে বলে জানিয়ে শুভঙ্করের দাবি, ‘‘বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূল শ্বেতপত্র প্রকাশ করে স্বচ্ছ উত্তর জানিয়ে দিক। তার পরে মানুষ বুঝে নেবেন কার কথা গ্রহণযোগ্য।’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিনই বালুরঘাটে বলেছেন, ‘‘কারও অসুস্থতা নিয়ে কটাক্ষ করা আমরা একেবারেই পছন্দ করি না। কিন্তু চোখের অস্ত্রোপচারের পরে অভিষেকের যে রকম বিধ্বস্ত ছবি সামনে এসেছে, তা হওয়ার কথা নয়।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে একাধিক মেডিক্যাল কলেজ এবং দেশে বেসরকারি অনেক চোখের হাসপাতাল রয়েছে। আমেরিকায় না গিয়ে সেখানেই অস্ত্রোপচার হতে পারতো। এখন তৃণমূল কর্মীরাই দেখুন, নেতাদের ঘরে ৫০০ কোটি। আর ৫০০ টাকা পাবে আমার বউ-বেটি!’’

এই প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘অভিষেক সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন। তার পরে রাজনীতির ময়দানে লড়াই হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এই সব ব্যাপারে এত রকম নাটক আগে করেছেন যে, তৃণমূল নেতাদের অসুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠাকে অস্বাভাবিক বলা যায় না!’’

adhir chowdhury Abhishek Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy