Advertisement
E-Paper

আশা-আশঙ্কার দোলাচলে ভোট প্রচার পরিকল্পনা 

মাঠে-ময়দানে কিংবা পাড়ার মোড়ে বা রাস্তার পাশে বড়, ছোট সভার আয়োজন বরাবর দেখেছেন আমজনতা

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৭
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

স্বপক্ষে যুক্তি আর বিপক্ষের বিরোধিতা। তেমনই থাকে রাজনৈতিক দলের ভোট প্রচারের মূল উপজীব্য। আর মাঠে-ময়দানে কিংবা পাড়ার মোড়ে মাইক বেঁধে তা করেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু কোভিড-১৯ পর্বে কি সেই পুরনো পথে হাঁটা যাবে নাকি নেট দুনিয়ায় ‘ছড়ি’ ঘুরিয়ে সারতে হবে প্রচার। তা নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচলে বঙ্গের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি।

মাঠে-ময়দানে কিংবা পাড়ার মোড়ে বা রাস্তার পাশে বড়, ছোট সভার আয়োজন বরাবর দেখেছেন আমজনতা। গায়ে গা লাগিয়ে হাঁ করে রাজনীতিকের ভাষণ গিলেছে জনতার ভিড়। আর এ সবে এলাকায় সংগঠনের ‘দখল’ ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ যেমন পায় রাজনৈতিক দল, তেমনই এলাকায় নিজের ‘প্রভাব’ বোঝাতে পারেন অনেক কর্মী-নেতা। কারণ, সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে ভূমিকা তাঁদের। তাই পুরনো পথে সভা আয়োজন গুরুত্ব হারালে এলাকায় ‘প্রভাব’ বার্তায় রাজনৈতিক কর্মী-নেতাদের টান পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষেজ্ঞরা।

ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন কর্মসূচিতে ক্রমেই দাপাদাপি বাড়ছে ভার্চুয়াল মাধ্যমের। প্রচার শুধু ভার্চুয়ালের গণ্ডিতে বাঁধা পড়লে কেন্দ্র বা রাজ্যের শাসক দল বেশি সুবিধা পাবে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। কারণ, শাসক দলের আর্থিক এবং সাংগঠনিক শক্তি অনেকটা বেশি থাকে। ভার্চুয়াল

জগতে দেশ জুড়েই বিজেপির আইটি সেলের ‘প্রভাব’ নিয়ে নানা চর্চা রয়েছে। বঙ্গে সমাজমাধ্যমে দলের প্রচারকে শক্তিশালী করতে বিধানসভা পিছু চার জন করে কর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল।

একটা চোঙা ব্যবহার করে গুটি কয়েক কর্মী নিয়ে ছোট রাজনৈতিক দলের সভা আয়োজনের সুযোগ থাকলেও ভার্চুয়াল জগতে তার সুযোগ নেই। তাই প্রচার থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ছোট রাজনৈতিক দলের, তা বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের দাবি, ভার্চুয়াল প্রচারের সুযোগে মাথাচাড়া দেবে ‘ফেক নিউজ’। যা আমজীবনে উত্তেজনা তৈরিতে ইন্ধন জোগাবে। নেট জগতের নিজস্ব ঢং, ভাষা রয়েছে। আমজনতার অনেকেই তাতে অভ্যস্ত নন। ফলে তাঁদের পক্ষে রাজনৈতিক দলের প্রচার কর্মসূচি বুঝে ওঠা কঠিন হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতিকে বিচার করে প্রচার নিয়ে নির্দেশিকা দেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের। সবাই যাতে মানেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে।’’

পরিস্থিতি অনুসারে প্রচার নিয়ে পদক্ষেপ করতে অসুবিধা হবে না। সেই দাবি করছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ ব্রায়েন। তাঁর মতে, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সব চিন্তাভাবনা, পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মানুষের জন্য কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা মাত্র ২২ বছরের দল। নবীন দল। তাই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পদক্ষেপ করতে আমরা যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ।’’ বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ অবশ্য বলছেন,

‘‘এখন থেকে বাংলার নির্বাচনের প্রচার নিয়ে গান গাওয়া অবান্তর। আগামী বছর পরিস্থিতি কী থাকবে, তা এখন বলা সম্ভব নয়।’’ মোবাইল ভ্যান, প্রোজেক্টর কিংবা দলীয় কর্মীদের গায়ে প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করে দলের কথা বলা, সে পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। এ ক্ষেত্রে করোনা বিধি মেনে প্রচার করা হবে বলে মত কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের। শুধুমাত্র ভার্চুয়াল প্রচার হলে পেড নিউজের প্রবণতা বাড়বে। তাই সবাই যাতে প্রচারের সমান সুযোগ পায়, তা কমিশনের দেখা উচিত বলে দাবি বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর।

পুরনো কায়দা নাকি ভার্চুয়াল পথ— প্রচারে কার প্রভাব বাড়বে? উত্তর ভবিষ্যতের গর্ভে।

West Bengal Assembly Election 2021 Coronavirus in West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy