বিড়ম্বনার সমর্থন। আলিপুর আদালতে ঢুকছেন মদন মিত্র। ফাইল চিত্র।
একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ মদন মিত্রর প্রবল প্রতাপই এখন তাঁর কাছে প্রবল বিড়ম্বনার। অবস্থা এমনই যে, জামিন পেতে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে সাধারণের জীবন যাপন করতেও রাজি তিনি। আজ আদালতে তাঁর আইনজীবী সরাসরি এ কথা বলেনও। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। অন্তত এ বারের জন্য খুলল না সাধারণের মতো জীবন যাপনের সেই দরজাটা। তাঁর প্রবল প্রভাবই অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালো তাঁর জামিনের পথে।
বড় কোনও কারণ ছাড়াই দিনের পর দিন ‘রাজার হাল’য়ে হাসপাতালে থেকেছেন মন্ত্রী। এর আগে আলিপুর আদালতে আনার সময়ে তাঁর গাড়ির উপর পুষ্পবৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর সমর্থকদের সামলাতে আদালত চত্বরে নামানো হয়েছিল পুলিশ বাহিনী। আলিপুর কোর্ট থেকে ব্যাঙ্কশাল, সেখান থেকে হাইকোর্ট, যত বারই মদন মিত্রের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে, তত বারই কারণ হিসাবে তাঁর প্রভাবের উল্লেখ করা হয়েছে। প্রভাবশালী মন্ত্রী জামিন পেলে তদন্তে প্রভাব পড়বে, বার বার এই অভিযোগ করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। জামিন পেতে মরিয়া মন্ত্রী দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাইকোর্টের। তাঁর হয়ে সওয়াল করার জন্য উড়িয়ে আনা হয়েছিল দুঁদে আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলকে। খ্যাতি এবং পারিশ্রমিক— দু’ক্ষেত্রেই প্রথম সারিতে থাকা সিব্বলকে আনতে প্রচুর খরচ করতেও পিছপা হননি পরিবহণমন্ত্রী। এমনকী সিব্বলকে আনার খরচ নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে পারে জেনেও পিছিয়ে আসেননি তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল কই? ফের এক বার খারিজ হল মদন মিত্রের জামিনের আবেদন। আদালতে সিব্বল এ দিন দাবি করেন, মন্ত্রিত্বই যদি মদন মিত্রের জামিনের প্রধান অন্তরায় হয়, তবে তা-ও ছাড়তে রাজি তিনি। কিন্তু ধোপে টিকল না সে যুক্তিও। এবং এ বারেও সিবিআই হাইকোর্টে আনল সেই প্রভাবশালী প্রসঙ্গই।
মদন মিত্রের হয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল। তৃণমূলনেত্রীর কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়েই তাঁকে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন মদন মিত্র। কংগ্রেসের এই হাই প্রোফাইল নেতার সারদা মামলায় অভিযুক্ত মদন মিত্রের হয়ে সওয়াল করায় কটাক্ষ করেছিল বিরোধীরা। অস্বস্তিতে পড়ে প্রদেশ কংগ্রেসও। এ দিনও কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান জানান, মদন মিত্রের হয়ে সিব্বল সওয়াল করায় তিনি হতাশ। এর আগেও অবশ্য সারদা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারী চেয়ে রাজ্য সরকারের হয়ে মামলা লড়েছিলেন সিব্বল। হার হয়েছিল সে বারে। আর এ বারেও পারলেন না তিনি। জামিন হল না ‘প্রভাবশালী’ মদন মিত্রর।
এই সংক্রান্ত আরও খবর:
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy