সংসদে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই চা বলয় নিয়ে কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে সরব হতে চান প্রকাশ চিক বরাইক। রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে শপথ নেওনার পর দিল্লি থেকে সোমবার তেমনটাই জানালেন তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি। এ দিনই রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নেন ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’-এর নেতা অনন্ত রায় (মহারাজ)। সংসদ থেকে বেরিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি তোলেন মহারাজ। দুই সাংসদের পৃথক দুই দাবি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি যথাক্রমে বিজেপি ও তৃণমূল।
২০০৬ সালে কুমারগ্রামের নিউল্যান্ডস চা বাগানে করণিক হিসাবে কাজে যোগ দেন প্রকাশ। তার পরেই সক্রিয় ভাবে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়। তবে তৃণমূলে প্রকাশের রাজনৈতিক উত্থান হয় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে। চা বলয়ের আদিবাসী নেতা বলে পরিচিত প্রকাশকে ওই বছর দলের জেলা সভাপতি করে তৃণমূল। এ বার সরাসরি তাঁকে রাজ্যসভার টিকিট দেয় রাজ্যের শাসক দল।
সাম্প্রতিক কালে রাজ্য রাজনীতিতে চা বলয়কে অনেকটা গুরুত্ব দিয়ে আসছে তৃণমূল। রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে তিনিও যে চা বলয়কেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চান, এ দিন শপথের পরে দিল্লি থেকে সেটা সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন প্রকাশ। তিনি বলেন, “শীতকালীন অধিবেশন থেকে সংসদে আমার নিয়মিত যাতায়াত শুরু হবে। সেই থেকেই চা বলয়ের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা নিয়ে সংসদে আমি সরব হতে চাই।”
প্রকাশের কথায়, “ন্যূনতম মজুরি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই চা বলয়কে বঞ্চিত করে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মাঝে এক বার চা বলয়ের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে এক হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। সে অর্থ আজও পর্যন্ত বরাদ্দ হয়নি। চা শ্রমিকদের এক জন প্রতিনিধি হয়ে এই বিষয় নিয়েই সংসদে আমি আওয়াজ তুলতে চাই।” প্রকাশের বক্তব্য নিয়ে মাদারিহাটের বিধায়ক তথা বিজেপির জেলা সভাপতি মনোজ টিগ্গা পাল্টা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চা বলয়ের উন্নয়নে যথেষ্ট সক্রিয়। রাজ্য সরকারই বরং চা বাগান নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে না।”
রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়ে অনন্ত রায় (মহারাজ) বলেন, "উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন আমার প্রথম লক্ষ্য থাকবে। সেই সঙ্গে ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে আমাদের যে দাবি (আলাদা রাজ্যের) তা তুলে ধরা হবে।" যা নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “উনি কোন রাজ্যের বাসিন্দা? উনি কী চান, সেটা আগে স্পষ্ট করুন। মানুষকে বোকা বানাতে ভাঁওতাবাজির কথা বলছেন।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে প্রকাশের শপথ গ্রহণের সময়ের সাক্ষী থাকতে এ দিন দিল্লিতে ছিলেন দলের আলিপুরদুয়ার জেলার নানা স্তরের অন্তত ৭০ জন তৃণমূল নেতা। আর যে নেতা-কর্মীরা দিল্লি যেতে পারেননি, সামাজিক মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রকাশকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)