সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে ‘হাত’-চিহ্নের প্রার্থীর জয়ের পরে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে গত কাল অভিনন্দন জানালেন বিজেপি নেতা তথা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কাল লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধীর ঢুকে নমস্কার বিনিময়ের ঠিক পরেই তাঁকে অভিনন্দন জানাতে দেখা যায় মন্ত্রীকে। জোশী কংগ্রেস নেতাকে শুভেচ্ছাও জানান বলেও খবর। বর্তমানে কংগ্রেসের সঙ্গে শাসক দলের, রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে যে প্রবল সংঘাত চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই টুকরো দৃশ্য যথেষ্ট ‘অন্য রকম’ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এই বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক থেকেই পরে বিজেপি তথা শাসক দলের আচরণের জন্য ‘ওয়াক আউট’ও করেছিলেন অধীর।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, নির্বাচনে কোনও আসনে কেউ জিতলে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে বাধা নেই অন্য কোনও দলেরই। বরং আদর্শ গণতন্ত্রে এটাই শিষ্টাচার। জিতে যাঁরা সংসদে আসেন, তাঁরা সকলেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য, সব ধরনের রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষের জন্য কাজ করবেন এটাই কাম্য। কিন্তু আজকের রাজনৈতিক বাস্তবতা এর একেবারেই বিপরীত বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের বক্তব্য, বরং শাসক-বিরোধী সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে গত কয়েক বছরে যে অধিবেশন সুষ্ঠু ভাবে চালানোই দায়।
এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ বিজেপির মন্ত্রী কেন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা উপনির্বাচনের জয়ে কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানালেন? তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, কংগ্রেস রাজ্যে ঘোষিত ভাবে বাম এবং অঘোষিত ভাবে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। সাগরদিঘির বিধানসভা আসনে পরাজয়ের পর তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেস এবং বিজেপি-র মধ্যে ‘অশুভ আঁতাঁতের’ কথা বলেছিলেন। সেই সঙ্গে ‘একা লড়াইয়ের’ কথাও বলতে শোনা গিয়েছে মমতাকে। তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি মন্ত্রীর উচ্ছ্বাস থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা মমতাকে হারানোর জন্য সব রকম আঁতাঁতে রাজি।
এ নিয়ে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সাগরদিঘির ঘটনার পর জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব আরও বেড়েছে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি সবাই একসঙ্গে ময়দানে নেমেছে আমাদের রাজ্যে।” তৃণমূলকে রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস সাংসদ মণিকম টেগোরের পাল্টা খোঁচা, “কেউ কেউ কখনও শিক্ষা নেয় না। উল্টে তারা নিজেদের ব্যর্থতা আর ভুলের জন্য অন্যদের দায়ী করে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)