হাওড়ার সিপিএম নেতা উত্তম বেরা। —ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির আঁচ সরকারি কর্মচারীদের গায়ে লাগে না। তাই সরকারি কর্মীদের মূল্যবৃদ্ধির যন্ত্রণার কথা বললে চলবে না। সূত্রের খবর, এমনটাই মন্তব্য করেছেন হাওড়ার সিপিএম নেতা উত্তম বেরা। দলীয় কর্মিসভায় সম্প্রতি উত্তমের এই মন্তব্য নিয়ে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও নানাবিধ আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও আনন্দবাজার অনলাইনকে তাঁর বক্তব্য নিয়ে সাফাইও দিয়েছেন সিপিএমের হাওড়া জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার হাওড়া উত্তর-পশ্চিম এরিয়া কমিটির সাধারণ সভা ছিল। হাওড়ার বেলগাছিয়ায় এরিয়া কমিটির দফতরে বুথ স্তরের সংগঠকদের নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই মূল্যবৃদ্ধি থেকে সরকারি কর্মচারীদের পৃথক করে দেখাতে চেয়ে ওই মন্তব্য করেন ওই সিপিএম নেতা। সভায় উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘভাতার (ডিএ) দাবিতে আন্দোলন করছেন। বাজারমূল্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয় ডিএ। সেই আন্দোলনে আমাদের সমর্থন এবং অংশগ্রহণ রয়েছে। তার পরেও এই ধরনের কথা বিভ্রান্তিকর।’’
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে উত্তমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমেই বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি অভ্যন্তরীণ মিটিংয়ে হয়েছে। আপনাদের কাছে কী ভাবে খবর গেল জানি না।’’ তার পরে অবশ্য তিনি কিছুটা সাফাইয়ের সুরে বলেন, ‘‘আমি ক্ষেত্র ধরে প্রচারের অগ্রাধিকারের কথা বলেছি। সরকারি কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্তদের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে। আবার ছাত্রসমাজের সমস্যা ভিন্ন। সেই প্রেক্ষাপটে বলেছি। মূল্যবৃদ্ধির আঁচ সরকারি কর্মচারীদের গায়ে লাগবে না, এটা সাধারণ ভাবে বলেছি। কিন্তু অতিরঞ্জিত করে ব্যাখ্যা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কর্মসংস্থান— এগুলো সাধারণ ইস্যু। কিন্তু আমাদের প্রচার করতে হলে ক্ষেত্র ধরে তাঁদের দাবি নিয়ে করতে হবে।’’
কথায় বলে শব্দ ব্রহ্ম। একবার বলে ফেললে ফেরানো মুশকিল। হাওড়ার সিপিএম নেতার বক্তব্য নিয়ে তাই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চের নেতা ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আমি জানি না ওঁর (উত্তমের) অর্থনীতি সম্পর্কে কতটা ধারণা রয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি সমাজের সব অংশের মানুষকেই প্রভাবিত করছে। মূল্যবৃদ্ধি থেকে নিস্তারের নানাবিধ প্রক্রিয়া রয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সেটি হল ডিএ। অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য তা ন্যূনতম মজুরি। পশ্চিমবঙ্গে দুটোই দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলে মূল্যবৃদ্ধির আঁচ সরকারি কর্মচারীদের গায়ে লাগে না, এই ব্যাখ্যা অবাস্তব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy