—প্রতীকী চিত্র।
পাড়ায় তাঁর পরিচয় ছিল ‘পশুপ্রেমী’। ‘পশুপ্রেম’ এতটাই যে তিনি নাকি নিজের খাবারেও ভাগ বসিয়ে রাস্তার কুকুরদের যত্ন করে খাওয়ান। প্রতিবেশীদের কাছে তাঁর এই পরিচয়টা আচমকাই বদলে গেল। খাবারের লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ঢুকিয়ে, পাড়ারই এক কুকুরের উপরে যৌন নির্যাতনের সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলেন। সোমবার রাতে এই কীর্তি ফাঁস হওয়ায় পর তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক এবং পশুনির্যাতনের ধারায় তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ঘটনাটি নদিয়ার তাহেরপুরের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম নরেন চক্রবর্তী। ৬১ বছরের নরেনবাবু পেশায় পুরোহিত। তাহেরপুর থানার কালিনারায়ণপুরে পাকা বাড়িতে সস্ত্রীক বাস করেন তিনি। এক ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। প্রতিবেশীদের থেকে পুলিশ জেনেছে, বরাবরই পশুদের প্রতি ভালবাসা ছিল তাঁর। রোজই পাড়ার কুকুরদের নিয়ম করে খাওয়াতেন। স্বাভাবিক ভাবেই নরেনের ভক্ত হয়ে উঠেছিল আশপাশের যত রাস্তার কুকুর।
এমনই চলছিল। তবে বছর খানেক আগে থেকে তাঁর রুটিনে সামান্য বদল আসে। এবার আর রাস্তাতেই সেই ‘ভালবাসা’ আটকে থাকেনি। খাওয়ার লোভ দেখিয়ে তিনি তাদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসতে শুরু করেন। এক এক দিন এক একটা কুকুরকে। তারপর ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন। আর ঘরের ভিতরে কুকুরটাকে খেতে দেওয়ার অছিলায় যৌন নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ করেছেন নরেনবাবুর স্ত্রী স্বয়ং।
বাসের মধ্যেই ব্যবসায়ীর উপরে অস্ত্র নিয়ে চড়াও, ছিনতাই লক্ষাধিক টাকা
এই ঘটনা নাকি কয়েক বছর ধরেই চলছিল। প্রথম দিকে বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে কুকুরের গোঙানির আওয়াজ পেলেও তাঁর স্ত্রী বিষয়টাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না। কিন্তু রোজ একই ঘটনা ঘটায় তাঁর সন্দেহ হতে শুরু করে। কেন কুকুরেরা ওইভাবে চিৎকার করে তা তিনি জানতে চাইলে বারবারই নরেনবাবু এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, একদিন তিনি জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে ফেলেন সেই নৃশংস দৃশ্যটি। নরেনবাবু তখন কুকুরের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত। স্বামীর প্রতি তীব্র ঘৃণার জন্ম নিলেও, লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে বিষয়টি খোলসা করতে পারেননি। স্বামীকে তিরস্কার করেন। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। নরেন স্ত্রীকে তার পর থেকেই মারধর করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। হুমকিও দিতে থাকেন। ভয়ে এবং লোকলজ্জায় বিষয়টি এতদিন নিজের মনেই চেপে রেখেছিলেন স্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেননি।
গতকাল, মঙ্গলবার, সন্ধ্যায় আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে তিনি চুপিসাড়ে গিয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। পুলিশ তৎক্ষণাৎ বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলে। হাতেনাতে পাকড়ও করা হয় তাঁকে। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক কুকুরকে।
৩৭৭ ধারায় অস্বাভাবিক যৌনতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাণাঘাট মহকুমা আদালতে তোলা হতে বিচারক তাঁর ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy