Advertisement
E-Paper

সামনে ভোট, কোমর বাঁধছে তৃণমূল

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নামতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে টানা কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিল জেলা তৃণমূল। আজ, সোমবার থেকে ব্লক স্তরে বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু হবে। কোথাও পথসভা, কোথাও মিছিল। ১৭ জুলাই থেকে জেলা নেতারা ব্লকে ব্লকে গিয়ে মিছিল- মিটিংয়ে যোগ দেবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০১:০৫

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নামতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে টানা কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিল জেলা তৃণমূল।

আজ, সোমবার থেকে ব্লক স্তরে বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু হবে। কোথাও পথসভা, কোথাও মিছিল। ১৭ জুলাই থেকে জেলা নেতারা ব্লকে ব্লকে গিয়ে মিছিল- মিটিংয়ে যোগ দেবেন। ইতিমধ্যে অবশ্য জেলা নেতারা ব্লকে ব্লকে গিয়ে প্রস্তুতি সভায় যোগ দিয়েছেন। কোথাও কোথাও মিছিলও হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “২১ জুলাইয়ের সমাবেশ ঘিরে ইতিমধ্যে দলের সবস্তরে উত্‌সাহ দেখা দিয়েছে। সমাবেশে জেলা থেকে প্রচুর মানুষ যাবেন। ব্লকে ব্লকে তার প্রস্তুতিও চলছে।”

তবে বেশ কিছু এলাকায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বিব্রত জেলা নেতৃত্ব। সংগঠনে খামতিও রয়েছে কোনও কোনও জায়গায়। জেলা তৃণমূলের এক নেতা মানছেন, “দল ক্ষমতায় থাকায় কিছু সুযোগ- সন্ধানী মানুষ দলকে সামনে রেখে নিজেদের ইচ্ছেপূরণ করার চেষ্টা করছে। ফলে, মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। একাংশ কর্মীও নিষ্ক্রিয় পড়ে পড়েছে। অথচ, পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করা জরুরি। টানা কর্মসূচি হলে নিচুতলায় দল কিছুটা চাঙ্গা হয়।” তাঁর কথায়, “২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি ঘিরে দলের সবস্তরের কর্মীদের মধ্যেই একটা আবেগ রয়েছে।”

দলের এক সূত্রে খবর, এই সুযোগে সংগঠনও কিছুটা গুছিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের হাওয়ায় রাজ্য জুড়ে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল সিপিএম। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৮টি, বামেরা ৯টি এবং কংগ্রেস ২টি।

অবশ্য ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলকে বিধানসভা কেন্দ্রওয়াড়ি হিসেবে ধরলে জেলায় এখন মাত্র ২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিরোধীরা। সবংয়ে কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে। খড়্গপুর সদরে এগিয়ে বিজেপি। বামেরা একটি আসনেও এগিয়ে নেই। অবশ্য তাতেও চিন্তা যাচ্ছে না শাসক দলের। তৃণমূলের একাংশই মনে করছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের একেবারে শূন্য হাতে ফেরানো নাও যেতে পারে। এর অন্যতম কারণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বেশ কিছু এলাকায় যে ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন নেতৃত্বের একাংশ। এমনিতেই সারদা- কাণ্ড সহ একের পর এক ঘটনায় দল বিড়ম্বনায়। তার উপর এই সময়ের মধ্যে জেলায় দলের একাংশ নেতা- কর্মীর আচার- আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারও কারও বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও উঠছে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্লকে ব্লকে গিয়ে প্রস্তুতি সভা থেকে ঠিক কি বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব? দলের এক সূত্রে খবর, নেতৃত্ব এই বার্তা দেওয়ারই চেষ্টা করছেন যে দল সকলের উপর নজর রেখেছে। কেউ যদি মনে করেন শুধুমাত্র নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা নিয়েই দল করেন, তাহলে তাঁর আশা কখনও পূরণ হবে না। দল তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপই করবে।

জেলা তৃণমূলের এক নেতা মানছেন, “সামান্য কিছু কর্মীর মধ্যে হতাশা আসছে। এটা ঠিক, গত বিধানসভা ভোটে জেতার পর কিংবা তার আগের লোকসভা ভোটে জেতার পর দলের কর্মী- সমর্থকদের মধ্যে যে উত্‌সাহ দেখা দিয়েছিল, গত লোকসভা কিংবা গত পুরসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পরও সেই উদ্দীপনা চোখে পড়েনি। অথচ, দল তখন বিরোধীপক্ষে ছিল, আর এখন দল ক্ষমতায়। কেন উন্মাদনায় ভাটা পড়ল তা দেখতে হবে। কারণ খোঁজাটা জরুরি!”

শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যা থেকে মনে করা যেতে পারে যে দলের কর্মীরা মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। বরং তাঁদের বক্তব্য, বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ফের তৃণমূলই ক্ষমতায় আসবে। জেলায় তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের জায়গাই থাকবে না! তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ, নির্মল ঘোষ, আশিস চক্রবর্তী প্রমুখের কথায়, “মানুষের কাছে এই সরকার মা- মাটি- মানুষের সরকার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কুত্‌সা- অপপ্রচার করছে। অবশ্য মানুষ এই কুত্‌সা- অপপ্রচার
প্রত্যাখান করছে।”

21st july ekushe july tmc vote preparation poll campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy