E-Paper

যাদবপুরে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে ‘নিগ্রহ’ সহ-উপাচার্যকেও

আগেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, এ দিন কোনও রকম অনুষ্ঠান করার অনুমতি কাউকেই দেওয়া হয়নি। ক্যাম্পাসে কিছু পরীক্ষা রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৯
jadavpur university

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

প্রবল উত্তেজনার আবহে সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের সম্প্রচার এবং রামপুজো, দুই কর্মসূচিই ভন্ডুল হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিযোগ, উদ্যোক্তা রামপন্থী পড়ুয়া এবং বাম সমর্থক পড়ুয়াদের মধ্যে বচসা ঠেকাতে গিয়ে রামপন্থী পড়ুয়াদের হাতে সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত নিগৃহীত হয়েছেন। অভিযোগ, তাঁর মুখে ঘুষি মারা হয়।

আগেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, এ দিন কোনও রকম অনুষ্ঠান করার অনুমতি কাউকেই দেওয়া হয়নি। ক্যাম্পাসে কিছু পরীক্ষা রয়েছে। ক্যাম্পাসে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের চেষ্টা সত্ত্বেও এ দিন তা বজায় থাকেনি।

এ দিন সকাল থেকে সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু-সহ কয়েক জন আধিকারিক ও শিক্ষক ক্যাম্পাসে ঘুরে কোনও অনুষ্ঠান, মিছিল না-করার অনুরোধ জানাতে থাকেন। প্রথম উত্তেজনা ছড়ায় তিন নম্বর গেটে। রামমন্দির উদ্বোধনের সরাসরি সম্প্রচারের জন্য প্রজেক্টর এবং অন্যান্য সামগ্রী-সহ একটি স্কুটারকে সেখানে আটকানো হয়। অনুষ্ঠান না করতে রামপন্থী পড়ুয়াদের অনুরোধ করেন অমিতাভ। কিন্তু তাঁরা শোনেন না। ‘গ্রিন জ়োন’-এ জমায়েত হয়ে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকেন।

এরই মধ্যে বাম, অতিবাম পড়ুয়াদের একটি দল পৌঁছয়। স্লোগান-যুদ্ধে উত্তেজনা চরমে ওঠে। অমিতাভ-সহ শিক্ষক ও আধিকারিকদের দেখা যায় মাঝে দাঁড়িয়ে দু’পক্ষকে সামলাতে। উদ্যোক্তা ছাত্রদের সরাতে গেলে তিন নম্বর গেট দিয়ে কয়েক জন বেরিয়ে যান। কিছু পড়ুয়া থেকেও যান। তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধে বামপন্থী ছাত্রদের। অভিযোগ, বচসা থামাতে গিয়েই নিগৃহীত হন অমিতাভ। বামপন্থী এক ছাত্রও আহত হন। তিন নম্বর গেটের দুই নিরাপত্তাকর্মী মুকুল চন্দ্র দাস এবং নির্নিমেষ রায়ও আহত হন। অরবিন্দ ভবনের পিছনে কিছু পড়ুয়াকে রামপুজোর প্রসাদ বিতরণ ও পড়ুয়াদের গেরুয়া টিকা লাগাতে দেখা গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে সারা দিন রাজ্যপাল দ্বারা অপসারিত অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, উদ্যোক্তাদের পক্ষে বহু বহিরাগত ক্যাম্পাসে ঢুকেছিলেন। তিনি এক জনের কাছে বিভাগের নাম জানতে চাইলে যুবকের উত্তর, তিনি বাংলা বিভাগে ভর্তি হতে এসেছেন। পার্থপ্রতিমের দাবি, এই সময় ভর্তির কোনও প্রশ্নই নেই।

এই অনুষ্ঠান অরাজনৈতিক বলে প্রথম থেকেই দাবি রামপন্থী পড়ুয়াদের। কিছু পড়ুয়ার অবশ্য দাবি, উদ্যোক্তাদের অনেকে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সমর্থক বলে পরিচিত। রামপন্থী পড়ুয়াদের দাবি, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। যুক্ত নন কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে। অন্যতম উদ্যোক্তা শৌভিক সাহার অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে অন্য সব অনুষ্ঠান হতে দেন। বলপূর্বক তাঁদের অনুষ্ঠান করতে দিলেন না।

অশান্তির পরেও ক্যাম্পাস ঘুরে অনুষ্ঠান, মিছিল না-করার অনুরোধ জানান অমিতাভ। বিকেলে বামপন্থী পড়ুয়াদের সংহতি মিছিল ঢাকুরিয়া ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। তাতে পুলিশ বাধা দেয় বলে তাঁদের অভিযোগ। রাতে অভিযোগ ওঠে, ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির দুই এসএফআই সমর্থক পড়ুয়াকে বিজয়গড়ে বিজেপি কর্মীরা হেনস্থা করেছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jadavpur University Ayodhya Ram Mandir

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy