সাংবাদিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সভা বর্ধমানের কার্জন গেটে। ছবি: উদিত সিংহ।
আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শুক্রবারও প্রতিবাদ চলছে জেলায় জেলায়। কেউ পথে নেমেছেন, কেউ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। আবার সংবাদমহলের সঙ্গে যুক্ত নন, এমনও অনেকে সমাজ মাধ্যমে সরব হয়েছেন।
দেবমাল্যের নিজের শহর খড়্গপুরের প্রেস ক্লাবের তরফে এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিষ্পত্তির দাবি জানানো হয়। খড়্গপুরের মহকুমাশাসকের কাছেও বিভিন্ন সংগঠনের তরফে দেবমাল্যের মুক্তির দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শাখার ডাকে এ দিন প্রতিবাদ সভা হয়েছে বর্ধমান শহরের কার্জন গেটে। সভায় সাংবাদিকেরা ছাড়াও ছিলেন আইনজীবী কমল দত্ত, নাট্যব্যক্তিত্ব উদয়শঙ্কর মুখোপাধ্যায়, বাউল শিল্পী স্বপন দত্ত-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাঁরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানান।
সাংবাদিক গ্রেফতারের নিন্দায় সরব কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের একাধিক প্রেস ক্লাব। কোচবিহারে জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অনুপম সাহা বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনার প্রতিবাদে, প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ওই সাংবাদিকের দ্রুত মুক্তি চাই।’’ কোচবিহার সদর মহকুমা প্রেস ক্লাবের তরফে ঘটনার প্ৰতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই ক্লাবের সম্পাদক সুমনকল্যাণ ভদ্র বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানাব। সাংবাদিকের দ্রুত মুক্তির দাবিও করছি।” আলিপুরদুয়ার টাউন প্রেস ক্লাবের সম্পাদক অম্লানজ্যোতি ঘোষ বলেন, “গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিকের দ্রুত মুক্তি চাই আমরা।”
এই গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে এ দিন প্রেস বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতিও। সমাজ মাধ্যমেও সংবাদ-গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত অনেকে, এমনকি তার বাইরের বহু মানুষও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। সোমবার পুরুলিয়া জার্নালিস্টস ক্লাব এই ঘটনার প্রতিবাদে জেলা পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেবে।
উল্লেখ্য, বুধবার দেবমাল্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, চোলাইয়ের রমরমা নিয়ে একটি খবর করার প্রেক্ষিতেই চোলাই কারবারির আত্মীয়েরা চোলাই নিয়ে অভিযোগকারিণী ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের নামে মামলা করে। তার ভিত্তিতে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের বিরুদ্ধে অত্যাচার প্রতিরোধ আইনে এফআইআর হয়। সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচী এবং চোলাই মদের কারবার নিয়ে অভিযোগকারী বাসন্তী দাসকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার দেবমাল্যদের মেদিনীপুর আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের দাবি, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের সমাজমাধ্যম শাখাও গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব। ইতিমধ্যেই এই প্রশ্নে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy