পাকিস্তানে বন্দি হওয়ার পর থেকেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। হুগলির রিষড়ায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ মুক্ত হয়ে ফেরার পর থেকে সে তৎপরতা যেন বেড়েছে! আগামী বিধানসভা ভোটে পরিবারের কাউকে প্রার্থী করা হতে পারে, কানাঘুষোয় এমন শুনেছেন বলে শনিবার দাবি করেন পূর্ণমের স্ত্রী রজনী। তবে সে কথা মানেনি কোনও দল।
পূর্ণমকে শুভেচ্ছা জানাতে এ দিন দুপুরে রিষড়ায় যান বিজেপির তিন বিধায়ক— পুরশুড়ার বিমান ঘোষ, কালনার অম্বিকা রায় ও গাইঘাটার সুব্রত ঠাকুর। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ভিডিয়ো-কলে পূর্ণমের কথাও বলান তাঁরা। পরে দেখা করবেন বলে ফোনে পূর্ণমকে জানান শুভেন্দু। সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরের সাংসদ তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে গিয়ে পূর্ণমকে শুভেচ্ছা জানান। সঙ্গে ছিলেন রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র। কল্যাণ বলেন, ‘‘কর্তব্য পালনকরতে এসেছি।’’
এই আবহে নানা মহলে প্রশ্ন, এই জওয়ানের বাড়ির কাউকে কি বিধানসভা ভোটে কোনও দলের প্রার্থী হিসেবে দেখা যাবে? পূর্ণমের স্ত্রী রজনীর দাবি, ‘‘তেমনই কানাঘুষো শুনছি। কোনও দলের তরফে সরাসরি ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব আসেনি। প্রস্তাব এলে, ভেবে দেখব।’’
তৃণমূলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গোড়া থেকেই ওই পরিবারের পাশে রয়েছি। এতে রাজনীতি নেই। প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে কি না, তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যাপার।’’ পুরশুড়ার বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য সম্পাদক বিমান ঘোষের বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী করার প্রস্তাব আমরাদিইনি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চিন্তা-ভাবনা করবেন।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ এবং কংগ্রেসের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পূর্ণমের কোনও আত্মীয়কে ভোটে দাঁড় করানোর ভাবনা তাঁদের নেই।
পূর্ণম জানান, পাকিস্তানের রেঞ্জারদের হাতে ধরা পড়ার পরে ভেবেছিলেন, দেশে ফেরা হবে না। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা জানতেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মনে সব সময় ভারতমাতা থাকেন। তাতেই ভয়মুক্ত ছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ভাগ্যে যা ছিল, ঘটে গিয়েছে। আর মনে করতে চাই না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)