Advertisement
০৫ মে ২০২৪

গণধর্ষণে কুড়ি বছরের কারাদণ্ড

সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, দোষী ব্যক্তিদের মধ্যে হিরু বাউরি, শান্তনু বাউরি, রাহুল বাউরি, লখু বাউরি ও লক্ষ্মীকান্ত ওরফে অক্ষয় বাউরিরা বাঁকুড়া সদর থানার জগদল্লা গ্রামপঞ্চায়েতের গড়াবাড়ির বাসিন্দা।

বাঁকুড়া আদালতে তোলার সময়ে অভিযুক্তেরা। নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া আদালতে তোলার সময়ে অভিযুক্তেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এক ছাত্রী। ঘটনার দু’বছরের মাথায় সোমবার ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সাত জনকে কুড়ি বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বাঁকুড়ার জেলা বিচারক অপূর্ব সিংহ রায়।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, দোষী ব্যক্তিদের মধ্যে হিরু বাউরি, শান্তনু বাউরি, রাহুল বাউরি, লখু বাউরি ও লক্ষ্মীকান্ত ওরফে অক্ষয় বাউরিরা বাঁকুড়া সদর থানার জগদল্লা গ্রামপঞ্চায়েতের গড়াবাড়ির বাসিন্দা। এছাড়া বিবেক আটা বাঁকুড়া সদর থানার শালবনী এলাকার নামোআঁচুড়ি এবং গৌরাঙ্গ পরামানিক বাঁকুড়া সদর থানার রাজগ্রাম এলাকার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা।

ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ছিল সরস্বতী পুজো। বাঁকুড়া সদর থানা এলাকার বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী সেদিন বিকেলে এক সহপাঠীর সঙ্গে স্কুটার নিয়ে রাজগ্রাম থেকে ধলডাঙা যাওয়ার রাস্তা ধরে ঠাকুর দেখতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় গড়াবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধুর থেকে টাকা পয়সা ও মোবাইল কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। এরপর রাস্তা থেকে তাঁদের টানতে টানতে একটি ফাঁকা মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বন্ধুর দিকে রিভলবার তাক করে ছাত্রীটিকে গণধর্ষণ করে ওই দুষ্কৃতীরা। সন্ধে ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। ছাত্রীর বন্ধু জখম অবস্থায় তাকে স্কুটারে চাপিয়ে ফিরে যান। ছাত্রীর পরিবার ঘটনাটি জানতে পেরে রাতেই বাঁকুড়া সদর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। ছাত্রীটিকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা করানো হয়।

ঘটনার তিন দিনের মাথায় ৪ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধু আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। তদন্তে নেমে ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধুর চুরি যাওয়া ফোনের সূত্র ধরে প্রথমে বিবেক আটাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিবেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদেরও গ্রেফতার করা হয় ওই বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি। গ্রেফতার হওয়ার দু’দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেন ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধু।

ধৃতদের মধ্যে রাহুল ছাড়া বাকিরা কেউ জামিন পাননি। ২০১৭ সালের ২২ মার্চ এই ঘটনার চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এদিন তাদের সাজা ঘোষণা হয়েছে।

অরুণবাবু বলেন, “বিচারক দোষীদের কুড়ি বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের নগদ টাকা জরিমানা করেছেন। বসন্ত পঞ্চমীর রাতে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। চাঁদের আলোয় দুষ্কৃতীদের মুখ ভালভাবেই চিনে রেখেছিলেন ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধু। ফলে পরে দোষীদের চিহ্নিত করতে অসুবিধা হয়নি।” তিনি জানান, এই ঘটনায় এক নাবালকও জড়িত রয়েছে। পৃথক আদালতে তার বিচার চলছে। এদিন দোষী সাব্যস্ত হওয়া লোকজনের আত্মীয়েরা আদালতে এলেও ঘটনাটি নিয়ে তাঁরা মুখ খুলতে চাননি। আসামী পক্ষের এক আইনজীবী অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা জেলা বিচারকের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Crime Imprisonment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE