এক তরুণীকে খুনের অভিযোগে তাঁরই স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে সদাইপুর থানার আদুরিয়া গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহত বধূর নাম বসুমিতা পাতর (১৯)। শ্বশুরবাড়ি থেকেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগেই মহম্মদবাজার থানার ভূতুরা পঞ্চায়েতের মালাডাঙ গ্রামের বাসিন্দা তপনকুমার ঘোষের মেয়ে বসুমিতার সঙ্গে বিয়ে হয় পারুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার আদুরিয়া গ্রামের সুনীল পাতরের ছেলে প্রবীরের সঙ্গে। প্রবীর পেশায় স্থানীয় একটি মুড়ি মিলের কর্মী। বসুমিতার বাবা তপন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘যথেষ্ট খরচ করে গত ফাল্গুনে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের উপর অত্যাচার শুরু করে।’’ ঠিক কী নিয়ে বিবাদ? বসুমিতার বাপের বাড়ির দাবি, জামাইয়ের সঙ্গে একটি মেয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তা জানতে পারার পর থেকেই বসুমিতার উপরে অত্যাচার চরমে ওঠে বলে তাঁদের অভিযোগ।
তপনবাবু এবং তাঁর আত্মীয়স্বজনের দাবি, এ দিন ভোরে জামাই তাঁদের খবর দেন, বসুমিতা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। খবর পেয়েই আদুরিয়ায় পৌঁছে তাঁরা দেখেন, বসুমিতা মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তপনবাবু বলেন, ‘‘যে সিলিংয়ের হুক থেকে গলায় দড়ি দেওয়ার কথা মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলছেন, তা অবাস্তব। সেখানে মেয়ের হাতই পৌঁছনোর কথা নয়। তা হলে মেয়ে কী ভাবে গড়ায় দড়ি দিল?’’ তাঁর অভিযোগ, মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই। মেয়ে খুন হয়েছে, বধূর বাপের বাড়ির লোক জনের এই সন্দেহ দৃঢ় হতেই প্রবল বচসা শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে। হয় হাতাহাতিও। এর পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে মৌখিক অভিযোগের পরেই পুলিশ নিহত তরুণীর স্বামী প্রবীর, শ্বশুর সুনীল এবং শাশুড়ি সবিতা পাতরকে আটক করে। বিকালে জামাই, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জা-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তপনবাবুরা। তার পরেই সকলকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বসুমিতার মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়। আজ, বুধবার ধৃতদের সিউড়ি আদালতে হাজির করানো হবে।