স্ত্রীকে নির্যাতন করার দায়ে, মঙ্গলবার দোষী স্বামীর সাজা ঘোষণা করল বোলপুরের আদালত। সরকারি পক্ষের আইনজীবী মহম্মদ জামিরুল হক বলেন, “স্ত্রীকে নির্যাতন করার দায়ে দোষী স্বামীকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বোলপুরের সহকারি জেলা ও দায়েরা আদালতের বিচারক অরুণ কুমার রাই। উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণে অভাবে, মৃত বধূর শ্বশুরবাড়ির চার জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন।”
জামিরুল জানান, “বছর দশেক আগে মুসলিম সমাজের রীতি মেনে নানুরের নিমড়া গ্রামের বাসিন্দা জাকির শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় লাভপুর থানার বলরামপুরের বাসিন্দা ডালিয়া খাতুনের। বিয়ের সময়ে শ্বশুর বাড়ির দাবি মেনে নগদ এক লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য দান সামগ্রী দেয় ডালিয়া বিবির পরিবার। বিয়ের পর ওই দম্পতির একটি পুত্র সন্তান হয়। অভিযোগ, আরও পণের দাবিতে স্বামী জাকির শেখ, শাশুড়ি বেলি বিবি, ননদ আলিয়া বিবি ও মন্টু বিবি এবং ননদাই বাবলু শেখ তাঁদের উপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের মাত্রা ছাড়ায় ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারি শ্বশুর বাড়িতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ডালিয়া বিবি।
পরিবার জানিয়েছে, সঙ্কটজনক অবস্থায়ে ওই দিন প্রথমে কীর্ণাহার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডালিয়াকে। এবং পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৫ জানুয়ারি মারা যান ডালিয়া বিবি। পরের দিন ২৬ জানুয়ারি নানুর থানায় স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির পাঁচ জনের নামে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ জানান মৃতার দাদা রহসন মল্লিক। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
সরকারি আইনজীবী জানান, চিকিৎসক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, রেকডিং অফিসার সাব ইনস্পেক্টর সন্দীপ চট্টোরাজ, মৃত ডালিয়া বিবির মা রসবা-বিবি সহ মোট ১১ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। ২০১৫ সালের ৪ মে থেকে চলতি বছর ৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই মামলার চলে সাক্ষ্য গ্রহন। বোলপুরের সহকারি জেলা ও দায়েরা আদালতের এজলাসে চলতি বছর ৭ এপ্রিল হয় সওয়াল জবাব। বধূ নির্যাতনের ঘটনা সন্দেহাতীত ভাবে অভিযুক্ত জাকির শেখ বিরুদ্ধে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন শনিবার। এ দিন তাঁর সাজা ঘোষণা করেছেন।
উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে বাকি অভিযুক্তদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এ দিন অবশ্য মৃত বধূর বাড়ির কেউ আদালতে হাজির ছিল না। সাজা প্রাপ্ত স্বামীর পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ মহিউদ্দিন জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন জানাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy