নিজের নামে জীবনে প্রথম এক সঙ্গে অনেকগুলো টাকা পেয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে পাড়ার এক দুঃস্থ শিশুকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়ে নজির তৈরি করেছে ঝালদা গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নেত্রা পোদ্দার। মঙ্গলবার বৃষ্টি ভেজা বিকেলে ঝালদায় নেত্রার মুখে এই কথা শুনে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা।
প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ইউনিসেফ এই জেলায় কন্যাশ্রী ক্লাব তৈরি করেছে। লক্ষ্য বাল্যবিবাহ রোধ করা, বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যার সচেতনতা তৈরি করা, স্কুল ছুটদের স্কুলে ফেরানোর কাজ ওই ক্লাবের সদস্য ছাত্রীরা করবে। সেই কাজ কেমন চলছে, তা সরেজমিনে দেখতে মঙ্গলবার দু’দিনের সফরে পুরুলিয়ায় এসেছেন ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা।
এ দিন বিকেলে তাঁরা ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঝালদা গার্লস হাইস্কুলে যান। সেখানে কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের সঙ্গে কথা বলেন ইউনিসেফের রাজ্যের অ্যাডোলেসেন এনগেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বপ্নদীপা বিশ্বাস, মৌমিতা দস্তিদার, জেলার প্রতিনিধি অনুরুদ্ধ রায় প্রমুখ। তাঁদের কাছে ওই ক্লাবের সম্পাদক ঝালদার পোদ্দারপাড়ার মেয়ে নেত্রা জানায়, গত জানুয়ারি মাসে কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে সে সাড়ে সাতশো টাকা পেয়েছিল। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে নেত্রার কথায়, ‘‘জীবনে প্রথমবার আমার বড় পাওনা, তাই খরচ করতে মন চাইছিল না। কিন্তু পাড়ার এক দুঃস্থ দিদির কাছে শুনি, তিনি তাঁর চার বছরের মেয়েকে একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করতে চান। সে জন্য প্রায় চারশো টাকা দরকার। কিন্তু ওই টাকা তাঁর নেই। তিনি দুঃখ করছিলেন। তখন সাত-পাঁচ না ভেবেই আমি তাঁকে কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া টাকা হাতে ধরিয়ে দিই।’’ এ কথা শুনে প্রতিনিধিরা তাজ্জব হয়ে যান। নেত্রার এই কাজের জন্য তাকে বাহবা দেন তাঁরা।