আশঙ্কা ছিল। সে আশঙ্কা সত্য করেই বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙে পড়ল পাড়ুই থানার অমরপুর পঞ্চায়েতের গরগড়িয়া গ্রামের গরগড়িয়া নিরুপমা বিদ্যামন্দিরের স্কুল ভবনের একাংশ। গ্রীষ্মের ছুটি থাকায় ও সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাটি ঘটায় কেউ হতাহত হয়নি। না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারত বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। সরকারি স্কুলের কেন এমন হাল? প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা। গরমের ছুটির পরে কী ভাবে স্কুল চলবে, তা নিয়েও চিন্তিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার যার সদুত্তর প্রশাসন দিতে পারেনি।
এ দিন স্কুলটি পরিদর্শনে আসেন সাঁইথিয়ার বিডিও সুজন পাণ্ডে, সাঁইথিয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রশান্ত সাধু, এসআই ফারহা আহমেদ প্রমুখ। ১৯৬৩ সালে স্কুলটির পথচলা শুরু। এখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৭০ জন। শিক্ষক, শিক্ষিকা রয়েছেন ১৫ জন। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক দিন ধরেই বাড়িটি জরাজীর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। বার বার জানানো সত্ত্বেও সংস্কারের কাজ হয়নি। স্কুলের মূল ভবন থেকে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ অন্যত্র সরানো হয়েছিল। বুধবারও ওই ভবনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কাজ হয়েছে।
স্থানীয়েরা জানান, গত কয়েক দিন ধরেই ঝড়বৃষ্টি চলছে। তার মাঝেই এই বিপত্তি। ঘটনার পরে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পাড়ুই থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা রাজেশ ডোম, প্রসাদ ডোমরা বলেন, “আমাদের আশঙ্কা ছিল যে কোনও দিন স্কুলটি ভেঙে পড়বে। কিন্তু এ ভাবে যে ভেঙে পড়বে তা আমরাও ভাবিনি। সরকারি স্কুলের যদি এমন হাল হয়, তা হলে ছেলেমেয়েদের কোন ভরসায় স্কুলে পাঠাব।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য চন্দ্রশেখর দাস বলেন, “গরমের ছুটির পরে আমরা কী ভাবে স্কুল চালাব তাই ভেবে পাচ্ছি না। স্কুলের সংস্কারের জন্য যে যেখানে যেতে বলেছেন, গিয়েছি। কিন্তু তার পরেও কোনও কাজ হয়নি।”
বিডিও বলেন, “স্কুলটি এ দিন আমরা পরিদর্শন করেছি। ভবনের যা অবস্থা তাতে ওই অংশটি দ্রুত ভেঙে ফেলা দরকার। না হলে আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছ। অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ এবং স্কুলের সীমানা প্রাচীরের প্রয়োজন রয়েছে। পুরো বিষয়টি জানিয়ে জেলাশাসককে একটি চিঠি দিয়েছি। চিঠির কপি সাংসদ এবং স্থানীয় বিধায়ককেও দেওয়া হবে।”
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিত সামন্ত বলেন, “আজ আধিকারিকেরা স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন। তিন দিনের মধ্যে তাঁদের একটি রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)