E-Paper

বাবার সঙ্গে প্রতিমা গড়ছে স্কুলছাত্রী মেয়ে

ললিতা জানায়, অনেক সময় সংসারের খরচ চালাতে মুদির দোকানে ধার করতে হয়। দুই দিদির বিয়ে দিতে বাজারে ধারও হয়েছে।

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:১৭
A girl making Durga Idol

রামপুরহাট, সব্যসাচী ইসলাম। ললিতা পাল দশম! শ্রেণীর ছাত্রী। বাবার সাথে প্রতিমা রঙ করছে। রামপুরহাট উত্তরণ ক্লাবে। —নিজস্ব চিত্র।

অভাবের সংসার। তাই বাবার সঙ্গে প্রতিমার কাজ করছে দশম শ্রেণির ছাত্রী ললিতা পাল। ফলে, বেঁচে যাচ্ছে সহায়ক শিল্পীর পারিশ্রমিক। এমনই দেখা যাবে রামপুরহাটে লোটাস প্রেসের কাছে উত্তরায়ণ ক্লাবে।

জানা গিয়েছে, ললিতার বাড়ি নলহাটি থানার বুজুং গ্রামে। বুজং বিষ্ণু নারায়ণ আদর্শ শিক্ষাপিঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে সে। বাবা মানিক পাল মৃৎশিল্পী। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রতিমা গড়ে যা উপার্জন হয়, তাতেই সারা বছর কোনওক্রমে সংসার চালাতে হয়।

ললিতা জানায়, অনেক সময় সংসারের খরচ চালাতে মুদির দোকানে ধার করতে হয়। দুই দিদির বিয়ে দিতে বাজারে ধারও হয়েছে। এই বছর চারটি দুর্গা প্রতিমা গড়ছেন বাবা ও মেয়ে মিলে। রামপুরহাট ছাড়াও কয়থা, পাহাড়পুর ও বুজুং গ্রামে প্রতিমা গড়ছেন তাঁরা।

ললিতা বলে, ‘‘তিন বছর ধরে পড়াশোনার সঙ্গে বাবাকে সাহায্য করি। একটি প্রতিমা তৈরি করে ১০-১৫ হাজার টাকা মেলে। সহশিল্পী থাকলে দিনে চারশো টাকা মজুরি দিতে হয়। মূর্তি গড়তে ২০ দিন মতো সময় লাগে। সহশিল্পী থাকলে অর্ধেকের বেশি টাকা তাঁর পিছনেই চলে যেত।’’ ললিতার এক গৃহশিক্ষক কৌশিক পাল বলেন, "ললিতা ভাল ছাত্রী। পড়ার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে কাজ করে। এই জন্য পড়াশোনায় সময় কম দিয়েও ভাল ফল করে।’’

ললিতার বাবা মানিক পাল। তিনি বলেন, "মেয়েকে পড়াশোনার জন্য বললেও কষ্ট দেখে আমাকে সাহায্য করে। সকালে আমার সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়। কাজ করে বিকেলে বাড়ি ফিরে। বাড়িতেও বিভিন্ন প্রতিমা তৈরিতে সাহায্য করে।’’ ললিতা বলে, "বাবার কিছুটা হলেও কষ্ট মেটানোর চেষ্টা করি। ইচ্ছে আছে চাকরি করে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবো।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rampurhat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy