E-Paper

জনজাতিতে বাড়তি গুরুত্ব অভিষেকের

এক্ষেত্রে নেতারা যেন কাছের মানুষের নাম না দিয়ে কাজের মানুষের নাম দেন, সতর্ক করেন অভিষেক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২০
পুরুলিয়ায় বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ায় বৈঠক। নিজস্ব চিত্র sujit4abp2023@gmail.com

তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ, এই অভিযোগে সুর চড়াতে তৃণমূল মনোভাবাপন্ন দলিত মানুষজনকে প্রচারের সামনের সারিতে আনতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। সে জন্য বিধানসভা ভিত্তিক ১৫ জন তফসিলি জাতি ও জনজাতির মানুষজনের নামের তালিকা তৈরি করে রাজ্যে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার বিভিন্ন জেলার নেতৃত্ব ও বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বলেন, “বিধায়কেরা আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিটি বিধানসভা থেকে ১০ জন তফসিলি জাতি এবং ৫ জন তফসিলি জনজাতির মানুষের নাম পাঠাবেন। জেলা সভাপতিরাও কেন্দ্রীয় ভাবে এই নাম পাঠাতে পারেন।’’

এক্ষেত্রে নেতারা যেন কাছের মানুষের নাম না দিয়ে কাজের মানুষের নাম দেন, সতর্ক করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘এমন নাম পাঠাবেন, যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, যাঁদের প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে, যাঁদের কথা মানুষ শোনে, লোকে চেনে, যাঁরা তৃণমূলের লড়াই আন্দোলন নিয়ে অবগত, যাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। আগামী দিন এই মানুষগুলিকে কাজে লাগিয়ে দলের কর্মসূচির যেন প্রচার করা যায়। বছরের পর বছর, মাসের পর মাস, দিনের পর দিন ধারাবাহিক ভাবে এসসি, এসটিদের উপরে কেন্দ্রের বঞ্চনার তালিকা তৈরি করে মানুষের কাছে পৌঁছব।” তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘নামের তালিকা আমরা দ্রুত পাঠিয়ে দেব। এই কাজ আগেই আমরা করে রেখেছি।’’

পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জেলায় কুড়মি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ভাল সংখ্যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে আদিবাসী কুড়মি সমাজ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যায়। অনেকে পঞ্চায়েতে প্রার্থীও হয়। তবে বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে তফসিলি জাতি ও জনজাতির মানুষকে গুরুত্ব দিতে কৌশল নিয়েছে তৃণমূল।

তবে ভারত জাকাত মাজি পারগানা মহলের বাঁকুড়ার জেলা গডেৎ বিপ্লব সোরেনের দাবি, ‘‘উনি রাজনৈতিক স্বার্থে আদিবাসীদের কাছে পেতে চাইছেন। সেটা রাজনীতিবিদেরা করেই থাকেন। তবে কেবল কেন্দ্রই যে আমাদের বঞ্চিত করছে তা নয়, রাজ্যেও নানা ভাবে সমস্যায় পড়ছি আমরা।’’ বিপ্লবের দাবি, সাঁওতালি মাধ্যমে শিক্ষার পরিকাঠামোর যথাযথ হল না। আদিবাসী পড়ুয়াদের হস্টেলগুলি নিয়েও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে অ-আদিবাসীরা সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছেন, অথচ প্রকৃত আদিবাসী যুবক-যুবতীরা শিক্ষিত হয়েও বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন। এগুলি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবা উচিত।

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, “তফসিলি জাতি-উপজাতিদের কেবল ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে না দেখে তাঁদের প্রকৃত উন্নয়ন করার ইচ্ছে থাকলে রাজ্য সরকার অনেক কিছুই করতে পারত।”

তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণ হয়েছে। তফসিলি জাতি ও জনজাতি পরিবারের ছোট থেকে থেকে বৃদ্ধ সবাই নানা ভাবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে উপকৃত হচ্ছেন। বিরোধীরা এ সব দেখতে পান না।’’

এর পাশাপাশি প্রতিটি বুথ থেকে চার জন করে কর্মীর নাম ও তাঁদের মোবাইল নম্বরও পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই চার জনের মধ্যে দু’জন তৃণমূলের, একজন মহিলা এবং একজন যুবকর্মী (যাঁর বয়স ৪০-এর কম) থাকবেন। অবিলম্বে জনসংযোগে নামতে জেলাকে নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। প্রতিটি বুথ সভাপতিকে আগামী রবিবার থেকে বাড়িতে, দোকানে যেতে বলেছেন।

বৈঠকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতো কিছুক্ষণ থাকলেও দলের একাধিক বরিষ্ঠ নেতা বা শাখা সংগঠনের পদাধিকারীরা ডাক না পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। দলের দাবি, রাজ্য থেকেই বৈঠকে কারা থাকবেন, তা ঠিক করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura Abhishek Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy