Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ বার হিন্দিতেই মাধ্যমিক আদ্রায়

রেলের দুই স্কুলে হিন্দি মাধ্যমে মাধ্যমিক, প্রয়োজনে উচ্চমাধ্যমিক পড়তে পারত আদ্রা এলাকার হিন্দিভাষী পড়ুয়ারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২১
Share: Save:

হিন্দি মাধ্যমে সাধারণ পড়ুয়াদের মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ মিলবে রেল শহরে। বুধবার আদ্রার মিশন হাইস্কুল মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হল।

রেলের দুই স্কুলে হিন্দি মাধ্যমে মাধ্যমিক, প্রয়োজনে উচ্চমাধ্যমিক পড়তে পারত আদ্রা এলাকার হিন্দিভাষী পড়ুয়ারা। কয়েক বছর আগে রেল সিদ্ধান্ত নেয়, রেলের স্কুলে শুধু রেল কর্মীদের ছেলেমেয়েরাই পড়তে পারবে। ফলে এলাকার হিন্দিভাষী ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ে। তখন থেকেই দাবি ওঠে, আদ্রার হিন্দি মাধ্যম মিশন হাইস্কুল মাধ্যমিকে উন্নীত করার। বুধবার সেই দাবি পূরণ হল।

এ দিন মিশন হাইস্কুল এবং একই চত্বরে থাকে বাংলা মাধ্যম পাঁচুডাঙা জুনিয়র হাইস্কুল মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়েছে। বিষয়টির সূচনা করেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অনাথবন্ধু মাজি, হাজারি বাউড়ি, রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতো, স্থানীয় আড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান মধুসূদন দাস প্রমুখ।

আদ্রার আড়রা পঞ্চায়েতের হিন্দি মাধ্যম মিশন স্কুলটি অনেক পুরনো। স্থানীয় ইউএমসি চার্চের দেওয়া জমিতে শুরু হয়েছিল এই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগ। পরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পর্যন্ত পড়ানো শুরু হয়। এখন ওই স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র সংখ্যা প্রায় সাতশো। হিন্দি মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে প্রচুর পড়ুয়ার মাধ্যমিক পড়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। কারণ, এলাকায় হিন্দি মাধ্যমে মাধ্যমিক পড়ার সুযোগ ছিল না সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য। সূত্রের দাবি, এই পরিস্থিতিতে অনেকে আনাড়া বা ঝাড়খণ্ডের ভোজুডি যাচ্ছিল নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে। অনেকের পক্ষে সেটা করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে প্রতিবছর বেশ কিছু স্কুলছুট হচ্ছিল। এ দিন পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘বিধায়ক হওয়ার পরেই রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে বিধানসভা— সর্বত্র এই স্কুলের উন্নীত করার জন্য দরবার করেছিলাম। কেন এই স্কুলটিকে মাধ্যমিক অব্দি উন্নীত করা দরকার শেষ পর্যন্ত রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরকে সেটা বোঝাতে পেরেছি আমরা।’’

পাঁচুডাঙা জুনিয়র হাইস্কুল উন্নীত হওয়ার ফলে এলাকায় আরেকটি মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা বাড়ল। স্কুল দু’টির উন্নীত করার জন্য টানা চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এ দিন অনুষ্ঠানে প্রায় সমস্ত বক্তাই উল্লেখ করেছেন পাঁচুডাঙা স্কুলের শিক্ষক সুশান্ত ঘোষের নাম। তাঁরা দাবি করেছেন, সুশান্তবাবুই গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার কলকাতায় উচ্চশিক্ষা দফতরে ছুটেছেন। সুশান্তবাবু জানান, প্রথম দু’বার তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিকাশ ভবনে আপিল কমিটির সভায় আধিকারিকদের তথ্য দিয়ে বোঝানো গিয়েছে স্কুলটি মাধ্যমিকে উন্নীত না হলে এলাকায় স্কুলছুটের সংখ্যা কমানো যাবে না। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘হিন্দী মাধ্যমের মাধ্যমিক স্কুল এলাকায় না থাকায় স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল।’’

এ দিকে, স্কুল দু’টি উন্নীত করা হলেও পরিকাঠোমো ও শিক্ষকের অভাব এখনও রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরাই। হিন্দি মাধ্যম স্কুলটিতে বর্তমানে শিক্ষকের সংখ্যা তিন জন। পাঁচুডাঙা বাংলা মাধ্যম স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন চার জন। মাধ্যমিকে উন্নীত হওয়াতে স্বভাবতই ছাত্র সংখ্যা বাড়বে। সেটা সামাল দেওয়া নিয়েই এখন চিন্তা। এ দিনের অনুষ্ঠানে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ এবং পরিকাঠামোর উন্নতির দাবি তুলেছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE