Advertisement
০১ মে ২০২৪
Visva Bharati University

বিদ্যুৎ-বিদায়ে গঙ্গাজলে বিশ্বভারতীর ‘শুদ্ধিকরণ’, অনুপমের কথা মতো উপাসনাগৃহেও গোবরজল

বিদ্যুৎ-পর্ব শেষ হতেই চেনা ছন্দে ফিরেছে বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার সকালে বৈতালিকের মধ্যে দিয়ে আশ্রম পরিক্রমা করেন প্রাক্তনী এবং প্রবীণ আশ্রমিকেরা। আয়োজন করা হয় প্রতীকী উপাসনারও।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৪
Share: Save:

বিদ্যুৎ-পর্ব শেষ হতেই চেনা ছন্দে ফিরেছে বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার সকালে বৈতালিকের মধ্যে দিয়ে আশ্রম পরিক্রমা করেন প্রাক্তনী এবং প্রবীণ আশ্রমিকেরা। আয়োজন করা হয় প্রতীকী উপাসনারও। কিন্তু সেই পুরনো ছবিই কিছুটা ম্লান হয়ে গেল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। বিদ্যুৎ-বিদায়ের খুশিতে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসের ভিতরটা গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধিকরণ’ কর্মসূচি পালন করল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। অন্য দিকে, বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার ঘোষণা মতো উপাসনাগৃহের সামনের জায়গা গোবরজল দিয়ে ধুয়ে দিলেন ‘রাষ্ট্রীয় হিন্দু শক্তি’ সংগঠনের সদস্যেরা।

বুধবারই উপাচার্য পদে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁর জায়গায় নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হচ্ছেন কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয়কুমার মল্লিক। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, অধ্যাপক, প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ আনন্দে মেতেছেন। বিদ্যুতের মেয়াদ-বৃদ্ধি না হওয়ায় মিষ্টিও বিতরণ করা হয়েছে। পরে সন্ধ্যায় বোলপুরের ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্যের কুশপুতুল নিয়ে মিছিল করে তা দাহও করা হয়। এর পর বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিস গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধিকরণ’ কর্মসূচি পালন করল শাসকদল। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের বিশ্বভারতী ইউনিটের সভাপতি মীনাক্ষী ভট্টাচার্য, প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি এবং দলের কয়েক জন কাউন্সিলর। পরে সবুজ আবির খেলাও মাতেন তাঁরা।

সেই সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফলক-বিতর্কে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলীয় কর্মীরা ধর্নামঞ্চ তৈরি করে যে আন্দোলন করছিলেন, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের কর্মসূচিতে উপস্থিত এক নেতার কথায়, ‘‘বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন। যে হেতু বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আর উপাচার্য নেই, তাই আমরা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আরও কিছু দিন সময় দিতে চাই। তাই ধর্না মঞ্চ তুলে নেওয়া হচ্ছে। তবে বিতর্কিত ফলক যদি না সরানো হয়, তা হলে পরবর্তী কালে আবার আন্দোলনে নামা হবে।’’

শাসকদলের এই কর্মসূচির পরেই উপাসনা গৃহের সামনের এলাকা গোবর জল দিয়ে ধোয়ালেন রাষ্ট্রীয় হিন্দু শক্তির সদস্যেরা। তাদের বক্তব্য, বিদ্যুতের অপসারণের দাবিতে তারাও দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন। তারাও চেয়েছিল, বিদ্যুতের যাতে মেয়াদ-বৃদ্ধি না করা হয়। বাস্তবেও তা-ই হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতা অনুপমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। তাঁদের আশা, আবার পৌষ মেলা ও বসন্ত উৎসব ফিরে আসবে শান্তিনিকেতনে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই শান্তিনিকেতনে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে গিয়ে রবীন্দ্রমূর্তিতে মাল্যদান করে অনুপম দাবি করেছিলেন, আগামী ৮ নভেম্বর বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুতের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁর মেয়াদ আর বৃদ্ধি হবে না। তার পরেই বিজেপি নেতা বলেছিলেন, ‘‘ওই উপাচার্য যাওয়ার পর শান্তিনিকেতনকে গোবরজল দিয়ে শুদ্ধ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati University Bidyut Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE