এই দুই ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে কলেজের গেটের বাইরে ‘স্ট্রিট পেন্টিং’ করেছিলেন। সে জন্য দুই কলেজছাত্রীকে ক্লাস থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার সারদামণি মহিলা কলেজের ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল থেকে এ নিয়ে উত্তেজনা কলেজ চত্বরে। শিক্ষক তথা প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে অংশ নিলেন কলেজের প্রাক্তনী থেকে সাধারণ মানুষও। শ্যামল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে লিফলেট ছড়ানো হচ্ছিল। তিনি তাতে বাধা দিয়েছেন।
শনিবার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্রীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা আরজি-কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেননি। সে জন্য কয়েক জন মিলে কলেজের গেটের বাইরে ‘স্ট্রিট পেন্টিং’ করেছিলেন। অভিযোগ, ওই বিষয়টি জানার পরেই কলেজের ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান তাঁর ক্লাস থেকে অপর্ণা মণ্ডল এবং প্রেয়সী টুডু নামের পঞ্চম সেমেস্টারের দুই ছাত্রীকে অপমান করে বার করে দেন। প্রেয়সী বলেন, ‘‘আমরা আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ‘স্ট্রিট পেন্টিং’ করাতেই আমাদের ক্লাস থেকে বার করে দেন শ্যামলবাবু। এটাও ‘থ্রেট কালচার’। বিভাগীয় প্রধানের এই কাজ আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই।’’ অপর ছাত্রী অপর্ণার মন্তব্য, ‘‘আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। অনেক বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও আমরা কলেজের গেটের বাইরে নিজেদের মতো প্রতিবাদ করেছি। শুধুমাত্র সেই অপরাধেই আমাদের ক্লাস থেকে বার করে দিলেন উনি!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কলেজের শিক্ষককে আমরা অভিভাবক হিসাবে মনে করি। কিন্তু অভিভাবক যে এমন আচরণ করবেন, আমরা ভাবতে পারছি না। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি।’’
মমতার মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য শ্যামলের দাবি অবশ্য ভিন্ন। শ্যামলের কথায়, ‘‘ওই দুই ছাত্রী কলেজে ক্লাসের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে লিফলেট ছড়িয়ে অন্যান্য ছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে উত্ত্যক্ত করত। ছাত্রীরা লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছিল আমাকে। ক্লাসে সুস্থ পঠনপাঠনের স্বার্থে দুই ছাত্রীকে ক্লাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। ওই দুই ছাত্রী নিজেদের শুধরে নিতে পারলে আবার ক্লাসে আসবে।’’ এ নিয়ে বাঁকুড়া জিলা সারদামণি মহিলা কলেজের টিচার ইন-চার্জ দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিভাগীয় প্রধান কী করেছেন, তা আমি জানি না। কলেজের দায়িত্বে থাকায় আমি এই ঘটনার দায় এড়াতে পারি না। দ্রুত ওই দুই ছাত্রী যাতে ক্লাসে ফিরতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy