কথায় বলে, ‘পুলিশে ছুঁলে আঠেরো ঘা।’ সে যে কেবল কথার কথা, এলাকার সবলা ও কন্যাশ্রী কিশোরীদের তা বোঝাতে সম্প্রতি মানবাজার থানা চত্বরে একটি সচেতনতা শিবির হল।
শিবিরের উদ্যোক্তা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম কর্তা রাণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে কিশোরীদের উপরে নানা ধরনের নির্যাতন হয়। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাবে তারা সব সময়ে রুখে দাঁড়াতে পারে না। পুলিশের কাছে যেতেও ভয় পায়।’’ তেমনই এক কিশোরীর দেখা মিলল শিবিরে। বাড়ি থেকে তার স্কুল বেশ কিছুটা দূরে। ফাঁকা রাস্তায় এক যুবক প্রায়ই তার পিছু নেয়। স্কুলের গেট পর্যন্ত ধাওয়া করে। অশালীন ইঙ্গিত করে। বাড়িতে মাকে সমস্ত কথা জানিয়েছিল ওই কিশোরী। কিন্তু তিনি আমল দেননি। এক বন্ধু বলেছিল থানায় জানাতে। সাহসে কুলোয়নি। ওই কিশোরী ভেবেছিল পুলিশের কাছে গেলে বাবা-মার কাছে খবর যাবে। বাড়িতে আরও বকা খাবে। শিবিরে মানবাজার থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়ার পরামর্শ দেন। থানার আধিকারিকের ফোন নম্বর শিবিরে যোগ দেওয়া শতাধিক কিশোরী খাতায় টুকে নেয়।
তবে প্রতিরোধ যে কিশোরীদের মধ্যেই সুপ্ত রয়েছে সেই কথাও স্পষ্ট হয়ে যায় শিবিরে। বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে থতমত খেয়ে যান পুলিশ কর্মীরাও। এক কিশোরী যেমন প্রশ্ন করে, ‘‘১০০ ডায়াল করলে অনেক সময়ে ফোনই তোলা হয় না। নম্বরটা রাখার কী মানে তাহলে?’’ ওই কিশোরীর অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন পুলিশ কর্তারা। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তাদের মতে, কিশোরীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আইসিডিএস কর্মী ও সুপারভাইজারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। এলাকায় ঘুরতে হয় বলে তাঁদের অনেকের সঙ্গে পরিচয় থাকে। তাঁদের কাছে অনেকে মন খুলে কথা বলতে পারে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে কিশোরীদের কাউন্সেলিং করায় তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন।
শিবিরে উপস্থিত ছিলেন মানবাজার ১ ব্লকের সিডিপিও অনুপ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘এই ব্লকে ন’ হাজারেরও বেশি কিশোরী সবলা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাদের জড়তা কাটাতে পরবর্তী সময়ে এই ধরনের আরও শিবির করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy