Advertisement
১৯ মে ২০২৪
কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাল পুলিশ

স্কুল খোলানো নিয়ে বেড়োয় ‘বোমাবাজি’

স্কুলের সামনে থেকে বিজেপির পিকেটিং তুলতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। অভিযোগ, বিজেপি তাঁদের উপরে চড়াও হয়। তৃণমূলের লোকজন আশ্রয় নেন স্কুলের ভিতরে

রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটিতে জখম পুলিশকর্মী। ছবি: সঙ্গীত নাগ

রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটিতে জখম পুলিশকর্মী। ছবি: সঙ্গীত নাগ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

বেলা বাড়তেই বন্‌ধ ঘিরে তেতে উঠল রঘুনাথপুর থানার বেড়ো গ্রাম। স্কুলের সামনে থেকে বিজেপির পিকেটিং তুলতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। অভিযোগ, বিজেপি তাঁদের উপরে চড়াও হয়। তৃণমূলের লোকজন আশ্রয় নেন স্কুলের ভিতরে। বিজেপির অভিযোগ, এর পরেই ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা এলাকায় বোমাবাজি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘বন্‌ধে স্কুল খোলাকে কেন্দ্র করে বেড়ো গ্রামে বিবাদ বেধেছিল। এক দলের লোকজন আটকে পড়ায় তাদের উদ্ধার করতে গ্রামে পুলিশ যায়। সেই সময়ে পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছোড়া হয়। কয়েক জন পুলিশ কর্মী অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন।”

বুধবার দুপুরে বেড়ো গ্রামের হাইস্কুল বন্ধ থাকার নিয়ে উত্তেজনার সূত্রপাত। বেড়ো পঞ্চায়েতে এ বার জিতেছে বিজেপি। বন্‌ধে গ্রামে ভালই প্রভাব দেখা গিয়েছিল। স্কুলের সামনে পিকেটিং করেছিলেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। শিক্ষকেরা ঢুকলেও পড়ুয়ারা ক্লাসে যেতে পারেনি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কয়েক জন পড়ুয়াকে নিয়ে স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। বাধা দেয় বিজেপি। দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ বাধে। অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মীদের উপরে বিজেপির লোকজন চড়াও হলে তাঁরা আশ্রয় নেন স্কুলের ভিতরে।

বিজেপির অভিযোগ, এর কিছু পরেই ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা গ্রামে ঢোকে। লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপরে। বোমা ছুড়ে, শূন্যে গুলি চালিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা চলে।

বড় বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) সত্যব্রত চক্রবর্তী ও কয়েকটি থানার ওসিরা। বিজেপি কর্মীদের উপরে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, লাঠি চালিয়ে তৃণমূলের লোকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে— এই অভিযোগ তুলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মীরা ও কিছু গ্রামবাসী। পাথর ছোড়া হতে থাকে। তার মধ্যেই স্কুলে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করে গ্রামের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, ঘটনার পরে স্কুলের সামনের একটি ঘরের লোহার দরজা ভেঙে পুলিশ কর্মীরা ভিতরে ঢুকে গৃহস্থদের লাঠিপেটা করে। তাতে তিন জন চোট পান। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে। কিন্তু লাঠিচার্জের অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেড়ো গ্রামে শান্তিপূর্ণ ভাবে বন্‌ধ হচ্ছিল। স্কুলে আসেনি পড়ুয়ারা, তৃণমূল বন্‌ধ ভাঙতে পরিকল্পিত ভাবে গ্রামে ঢুকে বোমা, গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল। আমাদের কর্মীদেরকেও মারধর করেছে। সেটা দেখেই গ্রামের মানুষ জোট বেধে প্রতিরোধ করেন।’’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির পাল্টা দাবি, বিজেপির কর্মীরা গা-জোয়ারি করে বন্‌ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কর্মীরা প্রতিবাদ করেন। তাতেই বিজেপির লোকজন চড়াও হয়। প্রাণ বাঁচাতে আমাদের কর্মীদেরই তো আশ্রয় নিতে হয়েছিল স্কুলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bandh Strike TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE