Advertisement
০৪ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

দেওয়াল জুড়ে শিল্পকর্ম, ভোটের লিখনে না গ্রামের

আদিবাসী-অধ্যুষিত ওই সব গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ির মাটির দেওয়ালে নিজেরাই সযত্নে রং দিয়ে নানা নকশা আঁকেন। তাই রাজনৈতিক প্রচারে সেই শিল্প তাঁরা নষ্ট করতে দেন না।

দেওয়ালে নেই কোন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন। বান্দোয়ানের আসনপানি গ্রামে। ছবি-রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

দেওয়ালে নেই কোন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন। বান্দোয়ানের আসনপানি গ্রামে। ছবি-রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ০৬:৩৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোট মানেই গ্রামীণ উৎসব। রংহীন দেওয়াল নানা দলের ভোট প্রচারের লেখায় রঙিন হয়ে ওঠে। কিন্তু এ সবের থেকে যেন দূরেই রয়ে গিয়েছে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বান্দোয়ানের কয়েকটি গ্রাম। পূর্ব সিংভূম ঘেঁষা বন্দোয়ানের আসনপানি, ঠারকাদহ, গুড়পানা, লটঝর্না প্রভৃতি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক দেওয়াল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোনও দলের দেওয়াল লিখন নেই।

বাসিন্দারা জানান, তাঁদের এলাকায় এটাই চল। কারণ, আদিবাসী-অধ্যুষিত ওই সব গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ির মাটির দেওয়ালে নিজেরাই সযত্নে রং দিয়ে নানা নকশা আঁকেন। তাই রাজনৈতিক প্রচারে সেই শিল্প তাঁরা নষ্ট করতে দেন না। তা মেনে নিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলিও।

আসনপানি গ্রামের বধূ সান্ত্বনা সরেন বলেন, ‘‘সারা বছর ধরে আমাদের বিভিন্ন উৎসব থাকে। তাই দূর থেকে মাটি এনে দেওয়াল লেপে বিভিন্ন রং দিয়ে সাজানো হয়। বাড়িতে আসা আত্মীয়েরা খ্যাতি করেন। রাজনৈতিক দল ওই দেওয়ালে ভোটের প্রচারের কথা লিখলে তা নষ্ট হয়ে যাবে।’’ গ্রামের আর এক বাসিন্দা মনসুক সরেন বলেন, ‘‘ভোট-উৎসব তো কয়েক দিনের। তার পরে যতক্ষণ না আবার মাটি লেপা হচ্ছে সেই লেখা থেকে যায়। সে কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে দেওয়ালে ভোটের প্রচারে লিখতে দেওয়া হয় না।’’

স্থানীয়েরা জানান, কয়েক বছর আগে দেওয়াল লিখতে এসেছিল রাজনৈতিক দলগুলি। সেই সময় তাঁরা আপত্তি করেন। আবার দেওয়াল লেখা ঘিরে গ্রামে বাসিন্দাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হত। সব দিক ভেবেই তাঁরা দেওয়াল লেখা বন্ধ রেখেছেন। তারপর থেকে আর কেউ লেখার জন্য আসেন না। তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করেন। ঠরকাদহ গ্রামের বাসিন্দা কান্দরু টুডু জানান, গ্রামের মানুষজন অবশ্য নিজের পছন্দের মতো রাজনৈতিক দলকেই ভোট দেন।

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রথু সিং বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি গ্রামে বহু দিন ধরেই দেওয়াল লিখতে দেন না স্থানীয়েরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা পাড়া বৈঠকের মাধ্যমে দলের প্রচারকরতে হয়।’’ বান্দোয়ানের তৃণমূল বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন বলেন, ‘‘দেওয়াল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে কোনও রাজনৈতিক দলকেই দেওয়াল লিখন করতে দেওয়া হয় না। তাই বাড়ি বাড়ি ঘুরেই প্রচার চালানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE