বার বার দাবি তোলা সত্ত্বেও জেলায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে না। প্রস্তাবিত ছাতনা-মুকুটমণিপুর ও বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ রেলপথের কাজেও অগ্রগতি নেই। এই সব অভিযোগ তুলে আজ, বৃহস্পতিবার জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশন উদ্বোধনের প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বয়কট করলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী।
বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে ১০৩টি অমৃত স্টেশনের উদ্বোধন হচ্ছে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রেলমন্ত্রক ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের তরফে অরূপকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে বুধবার রেল কর্তাদের ফোনে ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন অরূপ।
পরে তিনি বলেন, “বাঁকুড়া জেলায় ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ নির্মাণের কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে রয়েছে। বার বার বাঁকুড়া-মেজিয়া রেলপথ নির্মাণের দাবি কেন্দ্রের রেলমন্ত্রকের কাছে জানিয়েছি। অথচ সাড়া মেলেনি। জরুরি এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে সময় মতো চালাতে বার বার লিখিত ভাবে জানিয়েছি। তারপরেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে না। এ সব কারণেই আমি অমৃত স্টেশন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বয়কট করেছি। রেলকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছি। যে ভাবে রাজ্যের রেল যাত্রীদেরই বঞ্চনা করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই অনুষ্ঠান বয়কট করছি।’’
যদিও রাজ্যের রেল যাত্রীদের বঞ্চনার দাবি মানেনি রেল। রেলমন্ত্রকের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে রেলের পরিকাঠামো ও পরিষেবার উন্নয়নে ৮১ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকার কাজ চলছে। চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে এ রাজ্য রেলের উন্নয়নে ১৩ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকার ‘রেকর্ড’ বরাদ্দ পেয়েছে। কেন্দ্রের প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “সাংসদের ওই অনুষ্ঠান বয়কট করা সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতার পরিচয়। এ রাজ্যে বিরোধী দলের বিধায়কদের কোনও সরকারি কর্মসূচিতে ডাকা হয় না। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের গণতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।”
সুভাষের দাবি, রেলের সিগন্যালিং ব্যবস্থাকে বিশ্বমানের গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে আগামিদিনে ট্রেন চলাচলে শৃঙ্খলা আসবে। ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথের কাজ আটকে থাকার দায় কেন্দ্রের নয়। কারণ সেখানে জমি জট পাকিয়ে কাজটা আটকে রেখেছে রাজ্য সরকারই। কেন্দ্র বার বার চিঠি দিলেও রাজ্য সরকার সাহায্য করছে না।
অরূপ অবশ্য সুভাষের দাবি মানেননি। সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরে একাধিকবার ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথের কাজ শুরুর দাবিতে রেলমন্ত্রক ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। অরূপ বলেন, “এ রাজ্যের উন্নয়নে যে বিজেপির কোনও ভূমিকাই নেই, তাদের কাছে রাজনীতির পাঠ নিতে হবে নাকি! নিজে মন্ত্রী থাকাকালীন সুভাষবাবু জেলায় আটকে থাকা রেলের প্রকল্পগুলি নিয়ে কোনও কাজ করেননি। আমি সাংসদ হওয়ার পরে কেন্দ্রকে চাপ দিচ্ছি। আগামী দিনে ওই কাজ শুরুর জন্য দরকারে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)