Advertisement
E-Paper

পরীক্ষায় বসছে না কারা, খোঁজ

জেলার সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, কারা স্কুলে যাচ্ছে সেটা দেখতে প্রতিটি স্কুলে গত জুলাই, অগস্ট ও সেপ্টেম্বের হাজিরা খাতা দেখা হবে। আর আনা হবে বার্ষিক পরীক্ষার হাজিরা খাতা।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share
Save

সংখ্যার ভিতর থেকে একটা একটা করে কচি মুখ চিহ্নিত করতে উদ্যোগী হয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। স্কুলছুট মানে এ বার আর একটা শতকরা হিসেব নয়। একেবারে নাম ধরে চিহ্নত করা হবে কে আর স্কুলমুখো হচ্ছে না। যাওয়া হবে তাদের বাড়িতে।

কী ভাবে হবে এ সব?

জেলার সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, কারা স্কুলে যাচ্ছে সেটা দেখতে প্রতিটি স্কুলে গত জুলাই, অগস্ট ও সেপ্টেম্বের হাজিরা খাতা দেখা হবে। আর আনা হবে বার্ষিক পরীক্ষার হাজিরা খাতা। বাঁকুড়ার সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্প আধিকারিক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বার্ষিক পরীক্ষায় যে সমস্ত পড়ুয়া অনুপস্থিত থাকবে আমরা তাদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা বানাবো। পরীক্ষায় না বসার জন্য নানা কারণ থাকতে পারে। তবে ঠি কী হয়েছে সেটা জানতে আমরা যোগাযোগ করব অভিভাবকদের সঙ্গে।’’ তিনি জানান, কথা বলে যদি দেখা যায় পরীক্ষায় না বসা প়ড়ুয়াদের মধ্যে কেউ পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্ছে, তাহলে দরকার মতো যা করার করবে জেলা প্রশাসন।

সুপ্রভাতবাবু জানাচ্ছেন, জেলার ২২টি ব্লকের বিডিও ও ৪৫টি সার্কলের অবর স্কুল পরিদর্শকেরা জেলার সমস্ত প্রাথমিক, জুনিয়র হাইস্কুল ও হাইস্কুলের পড়ুয়াদের তথ্য সংগ্রহ করবেন। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের তথ্য নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে বিডিও-দের নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রভাতবাবু বলেন, “জেলার বেশিরভাগ স্কুলেই বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।”

এত দিন কী হত?

একটা দিক হল পরিসংখ্যান। বিভিন্ন স্কুলে কোন ক্লাসের কত পড়ুয়া উত্তীর্ণ হল, কতজন রয়ে গেল পুরনো ক্লাসে— এই সমস্ত দেখে অঙ্ক কষে নির্ণয় করা হয় স্কুলছুটের সংখ্যা। এর থেকে স্কুলছুটদের পরিচয় কিন্তু জানা যায় না। কেউ যদি এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে চলে যায়, সেটাও এই পদ্ধতিতে ধরা পড়ে না। ফলে একটা সংশয় থেকেই যায়।

এর জন্য রয়েছে সবর্বশিক্ষা মিশনের বুথ ভিত্তিক শিশু তথ্যপঞ্জি। এলাকার সব স্কুলের সমস্ত পড়ুয়ার নাম তাতে থাকে। প্যারাটিচার এবং শিক্ষাবন্ধুরা ওই তালিকা দেখে খোঁজখবর নিয়ে স্কুলছুট চিহ্নিত করেন। সেই কাজ কী ভাবে আর কতটা হয় তা নিয়ে অনেকে প্রায়ই প্রশ্ন তুলে থাকেন।

প্রশাসনের এই পরীক্ষার হাজিরা দেখার বন্দোবস্তে গোঁজামিলের জো থাকবে না বলে আশা শিক্ষকদের একাংশের। এমনকী খোদ মুখ্য সচিব মলয় দে এই পদ্ধতির প্রশংসা করেছেন। গত বুধবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে প্রশাসনিক বৈঠকে মলয়বাবু রাজ্য জুড়ে বাঁকুড়ার এই প্রকল্পটি চালু করার কথা বলেছেন।

জেলা সর্বশিক্ষ মিশন প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বাঁকুড়ায় প্রাথমিকের স্কুলছুট ছিল ১.০১২ শতাংশ। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে তা কমে হয়েছে ০.৩৯৭ শতাংশ। জেলার হাইস্কুলগুলিতে স্কুলছুটের হার ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ছিল ৬.৪৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে হয়েছে ৭.৩৫ শতাংশ। বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “স্কুলছুটের সংখ্যা শুন্যে নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। তার জন্য কোনও পড়ুয়া কেন পড়াশোনা ছাড়ছে সেটা জানতে হবে। এই পদ্ধতিতে সেটা জেনে গোড়া থেকে সমস্যা মেটাতে চাইছি আমরা।’’

school dropouts Bankura district administration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}