Advertisement
E-Paper

মারধর আর বোমায় তপ্ত বেলুট, তর্জা

পাত্রসায়রের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে শুধুমাত্র বেলুট-রসুলপুর এবং বিউর-বেতুর পঞ্চায়েতে লোকসভা ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বেলুটের এক বিজেপি কর্মী সুশোভন দত্তের হাতে তৃণমূলের কর্মীরা টাঙ্গির কোপ মারে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনাকে ঘিরেই গোলমালের সূত্রপাত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০২:০৭
(বাঁ দিক থেকে) জখম তৃণমূল কর্মী ও বিজেপি কর্মী। নিজস্ব চিত্র

(বাঁ দিক থেকে) জখম তৃণমূল কর্মী ও বিজেপি কর্মী। নিজস্ব চিত্র

এক বিজেপি কর্মীর উপরে হামলার অভিযোগে অশান্ত হয়ে উঠল পাত্রসায়রের বেলুট। পড়ল বোমা, ভাঙচুর চলল তৃণমূলের পার্টি অফিসে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তেতে রইল এলাকা। বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌঁছনোর পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পাত্রসায়রের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে শুধুমাত্র বেলুট-রসুলপুর এবং বিউর-বেতুর পঞ্চায়েতে লোকসভা ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বেলুটের এক বিজেপি কর্মী সুশোভন দত্তের হাতে তৃণমূলের কর্মীরা টাঙ্গির কোপ মারে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনাকে ঘিরেই গোলমালের সূত্রপাত।

বিজেপির পাত্রসায়র ২ মণ্ডলের সভাপতি তমাল ভুঁইয়ের অভিযোগ, এ দিন সকালে বেলুট বাজারে সুশোভনবাবু নিজের মোবাইল ফোনের দোকান খুলতে গেলে অতর্কিতে তাঁর উপরে হামলা চালায় তৃণমূলের কর্মীরা। তাঁর ডান হাতে কনুইয়ের উপরে টাঙ্গির কোপ মারে। তাঁকে পাত্রসায়র ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয়।’

তাঁর দাবি, ‘‘পাত্রসায়র থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বেলুটের দিকে যাচ্ছিলাম। বেলুটের আগে বলরামপুরের মুখে আমাদের লক্ষ করে তৃণমূলের কর্মীরা বোমা ছুড়তে থাকে। বেলা ১১টা থেকে প্রায় আধ ঘণ্টায় অন্তত গোটা দশেক বোমা ফাটায় তৃণমূলের লোকজন। আমাদের দলের কর্মীরা তেড়ে গেলে ওরা শালি নদী পার হয়ে নারায়ণপুরের দিকে পালায়।’’

এই ঘটনার পরে তৃণমূলের বেলুটের পার্টি অফিসে বোমা মজুত করা হয়েছে অভিযোগ তুলে লোকজন ভাঙচুর চালায়। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পার্টি অফিসে রাখা টিভি, কম্পিউটার, আলমারি, চেয়ার, জানলার কাচ ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পার্টি অফিসের সামনে রাখা তিনটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়। বেলা প্রায় ১২টা নাগাদ পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

তৃণমূলের বেলুট-রসুলপুর অঞ্চল সভাপতি তাপস বারি দাবি করেন, ‘‘বাজারে দলের কর্মীদের মধ্যে বচসায় ওই বিজেপি কর্মীর হাত কাচে লেগে কেটে গিয়েছে বলে শুনেছি। সেই ঘটনাকে মিথ্যার মোড়ক দিয়ে বিজেপি প্রচার করে এলাকা অশান্ত করে তোলে। ওরাই আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করে।’’ তৃণমূলের পাত্রসায়রের ব্লক সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহের অভিযোগ, ‘‘পার্টি অফিসে বিজেপির হামলায় জনি মুখোপাধ্যায় নামে আমাদের এক দলীয় কর্মীর মাথা ফাটে। কয়েকজন কর্মীর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। বোমাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওরা আমাদের পার্টি অফিসে গিয়ে কোনও বোমা পায়নি।’’

যদিও বিজেপি নেতা তমাল ভুঁইয়ের দাবি, ‘‘সমস্ত বোমা বস্তায় ভরে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিল তৃণমূল কর্মীরা।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জনরোষ আছড়ে পরে ওদের পার্টি অফিসে। বিজেপির কেউ ভাঙচুরে যুক্ত নয়।

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) অরুণাভ দাস বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি চালান। তিনি বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের পার্টি অফিসে কোনও বোমা পাওয়া যায়নি।’’

এই ঘটনা পাত্রসায়রের বাসিন্দাদের ১০ বছর আগের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে সিপিএম রাজ্যে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ার পরে এ ভাবেই পাত্রসায়র উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিল। সিপিএম ও তৃণমূল কর্মীদের খুন, সংঘর্ষ, বন্‌ধে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেই দিন আর দেখতে চান না পাত্রসায়রের বাসিন্দারা। তাঁদের আর্জি, প্রশাসন গোড়াতেই এই সব গোলমাল বন্ধে সতর্ক হোক।

Belut Patrasayer Political Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy