Advertisement
E-Paper

ব্যালট কাকে, হিসেব খাতায়

ভোটকর্মীদের ইডি ভোট দেওয়ার সময় এমন একটি অনিয়মের অভিযোগ উঠল, যার জন্য সেই গোপনীয়তাই ভঙ্গ হতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে। বাঁকুড়া ২ ব্লকের শুক্রবারের এই ঘটনার পরেই ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। যদিও তা ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ‘অজ্ঞানতাবশত ভুল’ বলেই দাবি করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০২:১২
বাঁকুড়া ২ ব্লকে ভোটকর্মীদের ভোট নেওয়ার কাজ। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

বাঁকুড়া ২ ব্লকে ভোটকর্মীদের ভোট নেওয়ার কাজ। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

ভোট মানে গোপনীয়তা। তবে ভোটকর্মীদের ইডি ভোট দেওয়ার সময় এমন একটি অনিয়মের অভিযোগ উঠল, যার জন্য সেই গোপনীয়তাই ভঙ্গ হতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে। বাঁকুড়া ২ ব্লকের শুক্রবারের এই ঘটনার পরেই ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। যদিও তা ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ‘অজ্ঞানতাবশত ভুল’ বলেই দাবি করা হয়েছে। তবে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “এই ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। ভোট পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় শুরু হয়েছে ভোটের কাজে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারি কর্মী ও পরিবহণ কর্মীদের ভোটগ্রহণ পর্ব। শুক্রবার বাঁকুড়া ২ ব্লকের পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভোটারদের টেবিলে গোপন তথ্য সংগ্রহ করে রাখার অভিযোগ ওঠে। ভোটারদের একাংশের অভিযোগ, কাকে কোনও ক্রমিক সংখ্যার ব্যালট দেওয়া হচ্ছিল, তা খাতায় লিখে রাখছিলেন ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। পাশে ভোটারদের স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। প্রথমে ঘটনাটি নিয়ে কেউই প্রশ্ন না তুললেও দুপুর নাগাদ কয়েক জন কর্মী প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বিডিও (বাঁকুড়া ২) অমরেশচন্দ্র দাসের কাছে গিয়ে ঘটনাটি বলেন। অভিযোগ পেয়েই অমরেশবাবু ওই টেবিলে এসে কাগজে লিখে রাখা তথ্য পেন দিয়ে কেটে ফেলেন। এই অভিযোগ পেয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রতীপ মুখোপাধ্যায় ফোনে মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালার কাছেও অভিযোগ জানান।

মহকুমাশাসক বলেন, “আমি বিষয়টি জানতে পেরেই বিডিওকে ফোন করে যে কাগজে ওই তথ্য লিখে রাখা হচ্ছিল, তা নষ্ট করে ফেলতে বলি।” এমন কাণ্ড হল কী ভাবে? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিডিওর জবাব, “ভোট কর্মীরা জানতেন না যে ব্যালট পেপার নম্বর লেখা নিয়ম বিরুদ্ধ। ভুলবশত করে ফেলেছেন। বিষয়টি জানতে পেরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।” ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে যাওয়ার আগে ভোট কর্মীদের দু’দফায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার নিয়ম। সেই প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরেও এমন ভুল কী ভাবে হয়, সেই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।

বিডিও ওই কাগজে পেন দিয়ে তথ্য কাটাকুটি করে ফেললেও গোপনীয়তা বজায় থাকা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ভোটদানকারীদের মধ্যে। অনেকেই বলছেন, “ব্যালট নম্বর ধরেই কে কাকে ভোট দিয়েছে তা জেনে ফেলা যাবে। আমরা খুবই চিন্তায় রয়েছি। নষ্ট করার আগে ওই খাতার ছবি কেউ তুলেও তো রাখতে পারেন।” পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ভোটারদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রশাসন যাতে তৎপর হয়, সেই দাবি তুলছি।”

কিছু দিন আগে খড়্গপুর মহকুমা এলাকাতেও ভোটকর্মীদের ভোটকে ঘিরে এমনই অভিযোগ উঠেছিল। বাঁকুড়ার এ দিনের অভিযোগকে ঘিরে শাসকদল ও প্রশাসনকে এক হাত নিয়েছেন বিরোধীরা। প্রতীপবাবুর অভিযোগ, “এ সবই হচ্ছে শাসকদলের নির্দেশে। সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকারটাই কেড়ে নিয়েছে তৃণমূল। এখন সরকারি কর্মীদের ভোটদানের উপরেও নজরদারি চালানো হচ্ছে।” বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার দাবি করেন, “বাম আমলে কো-অর্ডিনেশন কমিটি সরকারি কর্মীদের উপরে নজরদারি চালাত। এই আমলে প্রশাসনই তৃণমূলের হয়ে ওই কাজ করে দিচ্ছে।’’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব প্রশাসনের উপরে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ মানতে চাননি।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Voters Privacy Ballot
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy