Advertisement
E-Paper

বোমায় ভোট বন্ধ ঝিকড্ডায়

এ দিন সকাল থেকেই ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন বুথে তৃণমূল ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী দীনবন্ধু মণ্ডলের অভিযোগ, ঝিকড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুঁইচা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টকে বুথে বসতে দিচ্ছিল না শাসক দল।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০২:১২
গ্রেফতার: বোমাবাজির পরে। ঝিকাড্ডায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

গ্রেফতার: বোমাবাজির পরে। ঝিকাড্ডায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

বুথের সামনে বোমাবাজি, সংঘর্ষে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ জখম, ছাপ্পা ভোটের প্রতিবাদে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর— বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া সোমবার বিকেল পর্যন্ত ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরিবেশ ছিল শান্ত।

এ দিন সকাল থেকেই ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন বুথে তৃণমূল ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী দীনবন্ধু মণ্ডলের অভিযোগ, ঝিকড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুঁইচা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টকে বুথে বসতে দিচ্ছিল না শাসক দল। এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিরোধে ওই এজেন্ট বুথে বসতে পান। দীনবন্ধুবাবুর নালিশ, সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা নিয়ে ওই বুথে ঢুকে পড়ে। প্রিসাইডিং অফিসার সহ ভোটকর্মীদের ভয় দেখিয়ে ছাপ্পা ভোট মারতে থাকে। বিজেপি ও অন্য বিরোধী দলের সমর্থকেরা বাধা দিতে গেলে বুথের সামনে বোমা ফেলা হয় বলে অভিযোগ। বিরোধীরা দলবদ্ধ ভাবে রুখে দাঁড়ালে ওই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।

এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বুঁইচা গ্রামে পৌঁছে দেখা যায়, রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবন থেকে দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত সাঁতরা ও স্নেহাশিস দত্ত, ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও দেবজ্যোতি বড়াল সহ অন্য ভোটকর্মীরা ব্যালট মেলাচ্ছেন। বুথের ভিতরে পড়ুয়াদের খেলার স্লিপে বিস্ফোরণের পোড়া দাগ। স্কুলের সামনের রাস্তায় পড়ে রয়েছে বোমার সুতলি। বুথের প্রিসাইডিং অফিসার অরুণকুমার মণ্ডলের অভিযোগ জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানে ১১৯টি ভোট পড়েছিল। ১০টা নাগাদ বুথ চত্বরে বোমা পড়ে। পাঁচ জন দুষ্কৃতী বোমা-বোঝাই ব্যাগ নিয়ে বুথে ঢুকে ভোটকর্মীদের ভয় দেখিয়ে ছাপ্পা ভোট দিতে থাকে। বুথের বাইরে ভিড় জমতে থাকলে দুষ্কৃতীরা বুথের বাইরে বেরিয়ে দু’টো বোমা ফাটায়। অরুণবাবু জানান, প্রতিপক্ষের লোকেরাও বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দিতে থাকে। তাই সেখানে ভোট প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুর ১টায় ওই ভোটকর্মীরা বুঁইচা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক সেক্টর অফিসে চলে যান।

ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত সাঁতরা বলেন, ‘‘বোমাবাজির ভয়ে ভোটাররা বুথে আসেননি। তাঁরা এলাকায় পুনর্নিবাচনের দাবি তুলেছেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ঝিকড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংড়া পাহাড়কাটা প্রাথমিক স্কুলের বুথেও তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষে ভোট বন্ধ হয়ে যায়। বিজেপি কর্মীরা তির-ধনুক, বোমা নিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। বিজেপির নালিশ— তৃণমূল বুথ জ্যাম করছিল। প্রতিবাদ করলে শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে। ওই ঘটনায় ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ রথীন সরকার জখম হন। খবর পেয়ে এসডিপিও মিতুনকুমার দে-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে পৌঁছয়। কয়েকটি তির-ধনুক এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পাহারকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল।

ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির মল্লারপুর ২ পঞ্চায়েতের মুরলিডাঙ্গাল প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রচন্দ্রপুর হাইস্কুল সহ ডাবুক, বড়তুড়িগ্রাম, তালোয়া, কানাচি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির বিভিন্ন বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Violence Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy