E-Paper

দলছুট কেরিম, শহিদ দিবসে মাঠ ভরাতে ‘ভরসা’ আজ কাজলই

২০০০ সালের ২৭ জুলাই নানুরের সূচপুরে ১১ জন তৃণমূল সমর্থক খেতমজুর খুন হন। খুনের দায়ে ৪৪ জন সিপিএম নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন সাজা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ১০:১০
নানুর বাসাপাড়ায় শহীদ দিবসের প্রস্তুতি।

নানুর বাসাপাড়ায় শহীদ দিবসের প্রস্তুতি। — ফাইল চিত্র।

ধর্মতলার ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসে বীরভূম থেকে লোকসমাগমের লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে মেনেছেন তৃণমূলের নেতারাই। জেলার নানুরে আজ, বৃহস্পতিবার শহিদ দিবসেও মাঠ ভরানো নিয়ে ‘জল্পনা’ তৃণমূলের অন্দরে। প্রতি বার যিনি দায়িত্বে থাকেন সেই আব্দুল কেরিম খান এ বার স্বঘোষিত দলছুট। অনুব্রতহীন বীরভূমে তাই সমাবেশ সফল করাই কার্যত ‘চ্যালেঞ্জ’ নানুরের আরেক নেতা কাজল শেখের।

২০০০ সালের ২৭ জুলাই নানুরের সূচপুরে ১১ জন তৃণমূল সমর্থক খেতমজুর খুন হন। খুনের দায়ে ৪৪ জন সিপিএম নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন সাজা হয়। তাদের মধ্যে ১৯ জন উচ্চ আদালতে খালাস পান। কয়েকজন মারা যান। বাকিরা আজও সাজা খাটছেন। ওই হত্যাকাণ্ডের সহানুভূতির হাওয়া পালে লাগিয়ে জেলায় তৃণমূলের রাজনৈতিক উত্থান ঘটে। তার পর থেকেই স্থানীয় বাসাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে শহিদ বেদি তৈরি করে সমাবেশের আয়োজন করেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি প্রায় প্রতি বছর ওই সমাবেশে হাজির থেকেছেন। মঞ্চে না উঠলেও শহিদ বেদি সংলগ্ন এলাকা থেকে সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করেছেন অনুব্রত মণ্ডল।

দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত আব্দুল কেরিম খানই বরাবর ছিলেন এই শহিদ সমাবেশের অন্যতম আয়োজক। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, লাগোয়া পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে প্রতি বছর বাস ট্রাক বোঝাই করে কাতারে কাতারে লোক এসেছে সমাবেশে। এ বারে সমাবেশের তোরণে অনুব্রতর ছবি পর্যন্ত নেই।

এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেরিম খানকে টিকিট দেয়নি দল। তার জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছিল কাজলকে। সেই থেকে দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি কেরিমকে। তাই এ বারে নানুরের শহিদ দিবসের আয়োজন নিয়ে দলের অন্দরেই জল্পনা শুরু হয়েছে বলে দল সূত্রে দাবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের ব্লক স্তরের এক নেতার কথায়, ‘‘কাজল রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। তার মতোই রেকর্ড সংখ্যক জমায়েতে শহিদ সমাবেশ ভরানোও কাজলের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

কেরিম তাঁর অভিমান গোপন করেননি। তিনি খোলাখুলি বললেন, ‘‘আমি তো এখন দলছুট। দলের কোনও পদে নেই। তাই শহিদ সমাবেশ ভরানোর দায়িত্বও আমার নেই। যাঁরা পদে আছেন তাঁরা বুঝবেন। এখনও পর্যন্ত কেউ আমাকে যেতেও বলেননি। তবে দলের শহিদ সমাবেশ বলে কথা। বিশেষ কাজ না থাকলে সাধারণ কর্মী হিসেবে যেতে পারি।’’ দলের জেলা কোর কমিটির সদস্য কাজল অবশ্য এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

দলের কোর কমিটির মুখপাত্র বিকাশ রায়চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের শহিদ সমাবেশ কর্মসূচি একা কাউকে ভরাতে হয় না। স্বতঃস্ফূর্তভাবে এমনিই ভরে যায়। এ বারেও যাবে। মান অভিমান ভুলে সবাই শামিল হবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nanur Birbhum TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy