Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের অনুষ্ঠানে রাজনীতির রং

বিজেপির দাবিকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা রামপুরহাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুকান্ত সরকার।

এ ব্যপারে অভিভাবকদেরও স্কুলের পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। প্রতীকী চিত্র

এ ব্যপারে অভিভাবকদেরও স্কুলের পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৭
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবসে রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভারত ও বাংলাদেশ, দুই দেশের সৌভ্রাতৃত্বকে ‘থিম’ করে ছাত্রীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছিল। সেই অনুষ্ঠানেও আঁচ লাগল রাজনীতির। অভিযোগ উঠল দেশদ্রোহের! স্কুলের অনুষ্ঠান নিয়ে এ ভাবেই বিজেপি রাজনীতি করছে বলে তোপ দেগেছে তৃণমূল।
পাঁচ দিন আগে হওয়া ওই অনুষ্ঠান ঘিরে মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের (রামপুরহাট) কাছে বিজেপি-র রামপুরহাট শহর মণ্ডল কমিটির পক্ষ থেকে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। দলের শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি নীলকন্ঠ বিশ্বাস বলেন, ‘‘১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। একমাত্র ভারতবর্ষের পতাকাকে সম্মান দিয়ে ওই দিনটি পালন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে অনুষ্ঠান করা মানে দেশদ্রোহিতার শামিল বলে আমরা মনে করছি। এর জন্য আইনানুগ পদক্ষেপের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ মহকুমাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল অবশ্য এ ব্যপারে কিছু বলতে চাননি।
বিজেপির দাবিকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা রামপুরহাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুকান্ত সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর স্বাধীনতা দিবসেই রাখিবন্ধন উৎসব ছিল। সেকথা মাথায় রেখে স্কুলের ছাত্রীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ও সৌভাতৃত্বের বার্তা তুলে ধরেছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে এমন কিছু করা হয়নি, যাতে জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়।’’ তাঁর আরও দাবি, স্বাধীনতা দিবসের ওই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অনুষ্ঠানটির একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিজেপি-র তরফে। তাতে সাত মিনিটের পুরো অনুষ্ঠান না দেখিয়ে পরিকল্পিত ভাবে বাংলাদেশের পতাকা দেখিয়ে মূল অনুষ্ঠানকে বিকৃত করা হয়েছে।
রামপুরহাটের বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘স্কুলের একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ঘিরে বিজেপি যেটা করছে, সেটা রুচিশীল সাংস্কৃতিক মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে না। এটা নিয়ে ওরা ঘৃণ্য রাজনীতি করছে।’’ রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছায়া চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ছাত্রীরা কোনও রকম অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই অনুষ্ঠান করেনি। রবীন্দ্রনাথের লেখা দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। এই নিয়ে যেটা করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। এতে ছোট ছোট মেয়েদের মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে ভয়ের সঞ্চার হবে।’’ এ ব্যপারে অভিভাবকদেরও স্কুলের পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE