Advertisement
E-Paper

মহাকুম্ভ ‘মন্ত্রে’ সংগঠন রক্ষায় নজর বিজেপির

ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান। দলের নির্দেশ ছিল, সক্রিয় সদস্যের মর্যাদা ধরে রাখতে গেলে কর্মীদের অন্তত ৫০ জন করে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৩
Share
Save

বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে হিন্দু আবেগ উস্কে দিতে এ বার ‘মহাকুম্ভ’-কে হাতিয়ার করে সংগঠন গোছাতে নামতে চলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে প্রকাশ্যে এ নিয়ে এখনই কোনও কর্মসূচি ঘোষণা হয়নি। তবে তলে তলে প্রস্তুতি শুরু করেছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।

দলীয় সূত্রে খবর, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দলের জেলা ও জ়োনের শীর্ষ নেতৃত্বকে এ নিয়ে বার্তা দিয়েছে। কারা ইতিমধ্যেই মহাকুম্ভে গিয়েছেন, কারা যাননি তা নিয়ে বুথ স্তরে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। যাঁরা মহাকুম্ভে গিয়েছেন, তাঁদের কাছে যোগী রাজ্যের পরিকাঠামো কেমন লাগল তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। যাঁরা এখনও যাননি, তাঁদের নিয়ে যেতে বিশেষ ব্যবস্থা করতে ইঙ্গিতও দিয়েছে দল। ইতিমধ্যে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বেশ কয়েকটি বাস ভাড়া করে বাসিন্দাদের মহাকুম্ভে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে।

ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান। দলের নির্দেশ ছিল, সক্রিয় সদস্যের মর্যাদা ধরে রাখতে গেলে কর্মীদের অন্তত ৫০ জন করে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। সেই কাজের নিরিখে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় প্রায় ২৭০০ ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় প্রায় ১১০০ জন সক্রিয় সদস্য পদ পেয়েছেন। ওই সক্রিয় সদস্যদের নিজ নিজ বুথে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলা হয়েছে, কারা মহাকুম্ভে গিয়েছেন, কারা যাননি।

দলের এক রাজ্য নেতা বলেন, “মহাকুম্ভকে সনাতনী ধর্মের মানুষের কাছে তুলে ধরা, যত বেশি সম্ভব মানুষকে কুম্ভে যেতে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। দলীয় স্তরে এ নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করার বিষয়েও আলোচনা চলছে। তার আগে বুথে বুথে প্রাথমিক কাজ সেরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলার কার্যকর্তাদের।”

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা বলেন, “কুম্ভে যেতে মানুষের উৎসাহের সীমা নেই। অনেকেই যেতে না পেরে আমাদের কাছে এসে সাহায্য চাইছেন। আমরা কয়েকটি এলাকা থেকে বাস ছাড়ার ব্যবস্থা করছি। বাস ভাড়া করা হচ্ছে।”

দলীয় সূত্রের দাবি, কুম্ভে যাওয়ার বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব জেলাকে জানিয়েছে। অমরনাথ বলেন, “বুথে বুথে আমরা খোঁজ নিচ্ছি কারা মহাকুম্ভে গিয়েছেন, কারা এখনও যেতে পারেননি। যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের কেমন লেগেছে উত্তরপ্রদেশের পরিকাঠামো, তা-ও জানা হচ্ছে। যাঁরা যেতে পারেননি তাঁদের আমরা সাহায্য করতে চাই।”

দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র বলেন, “মহাকুম্ভে সাধারণ মানুষকে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দল এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও কর্মসূচির কথা জানালেই আমরা ব্যবস্থা করব। নিচুতলার কর্মীরা তৈরি রয়েছেন।”

অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার সময় হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনগুলির পাশাপাশি বিজেপিও বাড়ি বাড়ি মন্দিরের মাটি, প্রসাদি চাল বিলির কর্মসূচি নিয়েছিল। আগামী দিনে কুম্ভের মাটি বা জল দলীয় ভাবে বিলি করার পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে কি না তা নিয়ে বিজেপির নিচুতলায় চর্চা শুরু হয়েছে। বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন, “ধর্মীয় মেরুকরণ করতে গিয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে মুখ পুড়েছে বিজেপির। বিধানসভা নির্বাচনে ওদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে। সারা জেলা জুড়ে বিজেপির পাঁচ হাজার সক্রিয় কর্মীও নেই। মানুষের জন্য কাজ না করে শুধু ধর্মের হাওয়ায় ভোটে জেতা যায় না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}