বিক্ষোভ: কলেজের গেটে চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
ক্যাম্পাসিংয়ের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা।
বিষ্ণুপুরের বজ্র রাধানগর গ্রামে রয়েছে ওই কলেজ। মঙ্গলবার কলেজে গিয়ে দেখা যায়, মাইক লাগিয়ে কলেজের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ওই পড়ুয়ারা। গেটে তালা দেওয়ায় ভিতরে আটকে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কলেজকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিছুক ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ‘‘কলেজে ঢোকার সময় বলা হয়েছিল ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে কাজ পাব আমরা। চাকরি দে ওয়ার নামে গত চার বছর ধরে আমাদের গ্রুমিং, ট্রেনিং এমন নানা খাতে টাকা নেওয়া হয়েছে কলেজ থেকে। আর কুড়ি দিন বাদেই আমরা কলেজ ছাড়ব। একটিও ভাল সংস্থা ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য কলেজে আসেনি।’’ আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, ভুয়ো সংস্থায় চাকরি পাইয়ে তাঁদের অনেকের কাছে টাকা নেওয়া হয়েছে। অথচ মাসের শেষে বেতন নিতে গিয়ে তাঁদার ঘাড়ধাক্কা খেয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, সাত দিন এ ভাবেই আন্দোলন চালাবো। অষ্টম দিনে সমস্ত টাকা কলেজ ফেরত না দিলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।’’
বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা কিছুতেই রাজি হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ক্যাম্পাসিং নিয়মিত হয়। এ বছরই ২৮টি সংস্থাকে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু, প্রত্যন্ত এলাকায় এই কলেজ হওয়ায় এখানে না এসে অধিকাংশ কর্পোরেট সংস্থা নিজেদের অফিসে ইন্টারভিউ নিতে চায়। ছাত্রছাত্রীদের আবার দাবি, কলেজেই ইন্টারভিউয়ের বন্দোবস্ত করতে হবে।
তবে তিনি মেনেছেন, গত বছরে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের কিছু অসাধু ঠিকাদার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। ওই ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তাঁরা নিউটাউন থানায় অভিযোগ করেছিলেন বলে দাবি অপূর্ববাবুর। একই সঙ্গে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ছাত্র আন্দোলন হতেই পারে। কিন্তু, গেটে তালা দিয়ে বয়স্ক ও মহিলা শিক্ষকদের দিনভর আটকে রাখা। ওষুধ বা খাবার খেতে না দেওয়াটা কোন সুস্থ রুচির ছাত্রের পরিচয়? আমি বিডিও এবং বিষ্ণুপুর থানার আইসি-কে সব জানিয়েছি। দেখি, কতক্ষণ আটকে থাকতে হয়!’’ বিডিও (বিষ্ণুপুর) জয়তি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও লিখিত আবেদন পাইনি। মৌখিক আবদনের ভিত্তিতে একজন আধিকারিককে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠিয়েছি।’’
তাতেও অবশ্য পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। শেষে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কলেজে যান এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার। তাঁর কথায়, ‘‘গিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। আশা করি, সমস্যা মিটে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy