Advertisement
১১ ডিসেম্বর ২০২৩
oppression of TOTO

ভাত মারছে টোটো-অটো, ক্ষোভ

সিউড়ি-সাঁইথিয়া রুটে এক সময় সারাদিনে যেখানে ১১৬ বার বাস যাতায়াত করত, সেখানে এখন মাত্র তিনটি বাস দিনে সর্বাধিক ২০ বার যাতায়াত করে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:১৪
Share: Save:

নিয়ম না মেনেই জাতীয় ও রাজ্য সড়কে চলছে অটো-টোটো। এতে তাঁদের ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাস মালিকেরা। তাঁদের ক্ষোভ, বারবার জানানো হলেও এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।

বীরভূম জেলা বাস মালিকদের দুটি সংগঠনের অভিযোগ, অটো-টোটোর দাপটে বাস চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক রুটে। দুই সংগঠনেরই ক্ষোভ, সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ভবনে অটো, টোটোর দাপট কমাতে ও জেলাকে যানজট মুক্ত করতে যে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাদের কোনও প্রতিনিধিকে। ফলে ক্ষতি সামাল দিয়ে বাস কী ভাবে চালানো যাবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না মালিকদের।

এ দিন বাস মালিকদের দু’টি সংগঠনের পক্ষ থেকেই দাবি করা হয়, রাজ্য পরিবহণ বিভাগের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে রাজ্য সড়ক বা জাতীয় সড়কে কোনও তিন চাকার যান চলাচল করবে না। কিন্তু জেলা প্রশাসনের বৈঠকে সেই সম্পর্কিত কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে বাস মালিকদের অভিযোগ।

বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য শান্তনু মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন সহানুভূতির সঙ্গে টোটো ও অটো চালকদের রুটিরুজির কথা ভাবছেন, কিন্তু বাস মালিক ও তার সঙ্গে সম্পর্কিত বহু মানুষের রুটিরুজি যে প্রবল অনিশ্চয়তায় ডুবে রয়েছে, সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল চোখে পড়েনি।” বীরভূম জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানান, সিউড়ি-সাঁইথিয়া, সিউড়ি আমোদপুর, সিউড়ি-দুবরাজপুরের মতো একাধিক রুটে বাস চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে অটো-টোটোর দাপটে।

মুরারইয়ের এক বাস মালিক উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘মুরারই থেকে চাতরা যেতে বাস সময় নিচ্ছে ২৫ মিনিট। সেখানে টোটো ও অটো ১৫ মিনিটে পৌঁছে দিচ্ছে।’’

সিউড়ি-সাঁইথিয়া রুটে এক সময় সারাদিনে যেখানে ১১৬ বার বাস যাতায়াত করত, সেখানে এখন মাত্র তিনটি বাস দিনে সর্বাধিক ২০ বার যাতায়াত করে। বাকি বাসগুলি যাত্রীর অভাবে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রামপুরহাট মহকুমাতেও অটো ও টোটোর দাপটে অন্তত ১২টি রুটে বাস চলাচল এক প্রকার বন্ধই হয়ে গিয়েছে। পটেলনগর হয়ে সিউড়ি-সাঁইথিয়া বা আসানসোল-দুর্গাপুর থেকে যে বাসগুলি সিউড়ি হয়ে সাঁইথিয়া যেত, সেগুলির অধিকাংশই আর সাঁইথিয়া যায় না। সিউড়িতেই থেমে যায়।

মালিকদের দাবি, ২০১৬ সালে প্রথম তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে দরবার করেন। এরপর থেকে দফায় দফায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন করা হলেও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে সমস্ত জেলাশাসকের কাছে একটি নির্দেশ আসে, যেখানে জানানো হয় নথিভুক্ত না থাকা কোনও তিন চাকার গাড়িকে রাজ্য সড়ক ও জাতীয় সড়কে উঠতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে, সমস্ত তিনচাকা গাড়িকেই জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কে ওঠা আটকে দিতে হবে।

মালিকেরা জানান, সেই নির্দেশ আসার পর আশার আলো দেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু জেলা প্রশাসনের বৈঠকে তাঁদের না ডাকা এবং পরিবহণ দফতরের নির্দেশ সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্তের ঘোষণা না হওয়ায় হতাশ তাঁরা। শান্তনু বলেন, “আমরা প্রশাসনের সমস্ত নির্দেশ পালন করে ভাল যাত্রী পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু প্রশাসন যদি আমাদের সমস্যার বিষয়টি না দেখে, তাহলে আমরা অন্য রকম ভাবনা চিন্তা করতে বাধ্য হব। আশা করি বাস মালিক ও বাস কর্মীদের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে জেলা প্রশাসন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE